পাতা:বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা এই বিষয়বস্তু অবলম্বনে যেসব বাংলা লিরিকের স্বষ্টি হল তার আমরা নাম দিই পদাবলী । পুরনো বাংলায় লেখা চর্যাপদ তো ছিলই, তা ছাড়া অপভ্রংশে লেখা অনেক রকমের প্রাচীন লৌকিক ছড়াগানও ছিল। আবার সেনরাজাদের আমলে সংস্কৃতে লেখা লিরিক রসে ভরা ছোট ছোট চূৰ্ণ কবিতাও চোখের সামনে ছিল। সুতরাং বাংলা লিরিক যে পদাবলীর আকার ধারণ করবে তাতে আর বিচিত্র কি ? এই সময়কার বাঙালী কবিদের সামনে কাব্যক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় একটা আদর্শ মজুত ছিল । সেটি শ্ৰীজয়দেব-কবির বিরচিত সংস্কৃতে লেখা একটি খণ্ডকাব্য, গীতগোবিন্দ । এটি রাধাকৃষ্ণের লীলাপ্রসঙ্গের একটি পালাগান ৷ কবি জয়দেব রাজা লক্ষ্মণসেনের সভাসদ ছিলেন। লক্ষ্মণসেন বাহিকে ব্রাহ্মণ্য আচার রক্ষা করে চললেও মনে মনে পরম ভক্ত বৈষ্ণব ছিলেন। তাকে খুশি করার জন্যে বোধ হয় জয়দেব এই পালাগান রচনা করেছিলেন। কিন্তু বলার মধ্যে না-বলা, কিংবা না-বলার মধ্যে বলার আর্টটুকু জানা না থাকার দরুন জয়দেব-কবির গীতগোবিন্দ-কাব্য বড়গোছের ধর্মগ্রন্থই হয়ে আছে, উচুদরের কাব্যগ্রন্থ হয়ে উঠতে পারে নি। গীতগোবিন্দে স্বরের প্রচুর ঝংকার আছে বটে, কিন্তু তাতে লিরিকের ধ্বনি নেই । শব্দ কেবল শব্দই হয়ে রয়ে গেছে, তাতে শব্দের ব্যঞ্জন নেই। তবে স্থানে স্থানে নিতান্ত অজ্ঞাতসারেই যেন একটু-আধটু ধ্বনি ফুটে বেরোচ্ছে । যেমন গোড়াতেই : মেঘৈমে রম্বরং বনভূবঃ খামাস্তমালদ্রুমৈঃ । নক্তং ভীরূরয়ং ত্বমেব তদিমং রাধে গৃহং প্রাপ্রয় । ছোট্ট দুটি লাইনে তমালবৃক্ষরাজিঘন শু্যামল বনভূমির যে মনোহর চিত্রটি আমাদের চোখের সামনে ফুটে উঠল, সেটা অনুপ্রাসের গুণে কিংবা