পাতা:বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা * » ማ আর-কোনো অলংকারের বাহারে নয়। শুধু বাক্যসংযমের ফলে । তাই তো একজন ফরাসিস্ কবি বলে গেছেন, ‘তুমি যা বললে তা তো আমি ছু কান দিয়েই শুনলুম। কিন্তু তুমি যা বলতে গিয়েও বলতে পারলে না, সেটা যে কি, তাই ভাবতে ভাবতে আমার দিন কাবার হয়ে এল।’ আসলে সেইটেই তো হল কাব্য । - কিন্তু ফাক শব্দের ঝংকারও যে মানুষের মনকে কতখানি আকৃষ্ট করতে পারে তার ও নিদর্শন গীতগোবিন্দে অনেক আছে । যেমন : ললিতলবঙ্গলতাপরিশীলনকে মলমলয়সমীরে । মধুকরনিকরকরম্বিতকোকিলকূজিতকুঞ্জকুটীরে । কিন্তু কিছুক্ষণের জন্তে মনকে আকৃষ্ট করলেও এটা বেশিক্ষণ মনে বসে না । বলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এটার শেষ হয়ে আসে । এতে এমন কোনো ব্যঞ্জন নেই যে, বলার পরও সেটা মনে জেগে থাকবে । তবে মানুষের শিশুর মতো মন ছন্দের ঝংকারের কাছে চিরকালই পরাভব মেনে এসেছে । তাই, বাংলার গীতগোবিন্দ-কাব্যের আদর ভারতবর্ষের সর্বত্র । এই কাব্যে একটি লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে এই যে, এটি যদিও সংস্কৃত ভাষায় লেখা, কিন্তু সে-সংস্কৃত প্রায় ভাষায় এসে ঠেকেছে । আর সেই সঙ্গে এও দেখা যাচ্ছে, গানের যা স্বাভাবিক ছন্দ, সেই শব্দমিলের ছন্দই এখানে প্রবল হয়ে উঠেছে। শুধু তালের ছন্দের উপর এর নির্ভর নয়। যেমন : পততি পতত্রে বিচলিত পত্রে শংকিত ভবদুপয়ানম্। রচয়তি শয়নং সচকিত নয়নং পণ্ঠতি তব পন্থানম্। মুখরমধরং ত্যজ মঞ্জীরং রিপুমিব কেলিৰু লোলম্। চল সখি কুঞ্জং সতিমির পুঞ্জং শীলয় নীলনিচোলম্।