পাতা:বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা ૨ 8 গোলমেলে কথা । তা আমাদের অত গোলমালের ভিতর ঢুকে কি লাভ ? নাম-ধাম গাইগোত্র সঠিক জানা না থাকলেও ভালো কবিতা পড়ার আনন্দ থেকে কে আমাদের ঠেকাতে পারে ? আমাদের কাছে পণ্ডিতদের বারদুয়ার বন্ধ থাকলেও আমাদের মনের ভিতরক্রুয়ার যে খোলা । আর, সেইখান থেকেই তো নন্দনকাননের পারিজাতপুষ্পের গন্ধ ভেসে আসে । কিন্তু একটা কথা আছে । চণ্ডীদাস বিদ্যাপতি এরা সব বড় বড় কবি বলে তাদের পরবর্তী অনেক পদকর্তা নিজেদের লেখা পদ ঐ দুই মহাকবির নামে চালিয়ে দিয়েছেন। এতদিন পরে কোনটি যে সত্যিকার চণ্ডীদাস-বিদ্যাপতির পদ, আর কোনটি যে নয়, তা স্থির করতে গিয়ে মাথা ঘুরে যাওয়া কিছুমাত্র অসম্ভব নয়। চণ্ডীদাসের পরেই আসেন বিদ্যাপতি ঠাকুর । বিদ্যাপতি কিন্তু মৈথিল । তা হলে কি হয় ? আমরা অনেকদিন আগের থেকেই তাকে বাঙালী কবি বলে মেনে নিয়েছি এবং সেই সম্মানই তাকে দিয়ে এসেছি । আর দেবই-বা না কেন ? চণ্ডীদাসের পদ : বসিয়া অবন্তীপুরে পড়য়া পড়ন পড়ে। হেনকালে এক রসের নায়রি দরশন দিল মোরে । সে যে চাহিল আমার পানে হানিল মদনবাণে । সেই হতে মন করে উচাটন ধৈরজ না মানে প্রাণে । সে যে রসের পুতলী বালা তার মদনমোহন লীলা। . চেতন সহিতে চড়ি মনোরথে করয়ে বিবিধ খেলা । তার পর দিনে দেবী আরাধনে বসিলাম যতন করি । ওই শুভক্ষণে দেবীর আঙ্গিনে পেখলু সেই গৌরী। হায় মন চলি গেলা কেন ? দেখিয়া সেরাপ নবীন পীরিতি স্মরণ লইলা যেন ।