পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X 88 so বাংলা শবদতত্ত্ব বিশেষ বিশেষ্য একবচন মোটামুটি বলা যাইতে পারে বাংলার নির্দেশক চিহ্নগুলি শব্দের পূর্বে না বসিয়া শব্দের পরেই যোজিত হয় । ইংরেজিতে "the room'— বাংলায় ‘স্বরটি । এখানে ‘টি’ নির্দেশক চিহ্ন । টি ও ট। ইংরেজিতে the আর্টিক্ল একবচন এবং বহুবচন উভয়ত্রই বসে কিন্তু বাংলায় টি ও টা সংকেতের দ্বারা একটিমাত্র পদার্থকে বিশিষ্ট করা হয়। যখন বলা হয়, ‘রাস্তা কোন দিকে তখন সাধারণভাবে পথ সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হয়— যখন বলি, ‘রাস্তাটা কোন দিকে’— তখন বিশেষ একটা রাস্তা কোন দিকে সেই সম্বন্ধেই প্রশ্ন করা হয় । ইংরেজিতে 'the' শব্দের প্রয়োগ যত ব্যাপক বাংলায় ‘টি’ তেমন নহে । আমাদের ভাষায় এই প্রয়োগ সম্বন্ধে মিতব্যয়িতা আছে। সেইজন্যে যখন সাধারণভাবে আমরা খবর দিতে চাই, মধু বাহিরে নাই, তখন আমরা শুধু বলি, মধু ঘরে আছে– ঘর শব্দের সঙ্গে কোনো নির্দেশক চিহ্ন যোজনা করি না। কারণ ঘরটাকেই বিশেষ ভাবে নির্দিষ্ট করিবার কোনোই প্রয়োজন নাই। ইংরেজিতে এ স্থলেও ‘the room বলা হইয়া থাকে। কিন্তু যখন কোনো একটি বিশেষ ঘরে মধু আছে এই সংবাদটি দিবার প্রয়োজন ঘটে তখন আমরা বলি, ঘরটাতে মধু আছে। এইরূপ, যে বাক্যে একাধিক বিশেষ্যপদ আছে তাহদের মধ্যে বক্তা যেটিকে বিশেষভাবে নির্দেশ করিতে চান সেইটির সঙ্গেই নির্দেশক খোজনা করেন। যেমন, গোরুটা মাঠে চরছে, বা মাঠটাতে গোরু চরছে। জাজিমটা ঘরে পাতা, বা ঘরটাতে জাজিম পাতা । ‘আমার মন খারাপ হয়ে গেছে’ বা ‘আমার মনটা খারাপ হয়ে গেছে”— দুইই আমরা বলি । প্রথম বাক্যে, মন খারাপ হওয়া ব্যাপারটাই বলা হইতেছে— দ্বিতীয় বাক্যে, আমার মনই যে খারাপ হইয়া গিয়াছে তাহার উপরেই বেfাক । ‘টি’ সংকেতটি ছোটো আয়তনের জিনিস ও অাদরের জিনিস সম্বন্ধে এবং ‘টা’ বড়ে জিনিস সম্বন্ধে বা অবজ্ঞা কিংবা অপ্রিয়তা বুঝাইবার স্থলে বসে। ষে পদার্থ সম্বন্ধে আদর বা অনাদর কিছুই বোঝায় না, তৎসম্বন্ধেও টা প্রয়োগ