পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У Ф. е. বাংলা শব্দতত্ত্ব গাছা ও গাছি ‘খানি খান’ যেমন মোটের উপরে চওড়া জিনিসের পক্ষে, ‘গাছা’ তেমনি সরু জিনিসের পক্ষে। যেমন, ছড়িগাছা, লাঠিগাছা, দড়িগাছা, স্বতোগাছা, হারগাছা, মালাগাছা, চুড়িগাছা, মলগাছা, শিকলগাছা । 帶 এই সংকেতের সঙ্গে যখন পুনশ্চ ‘টি’ ও ‘টা’ চিহ্ন যুক্ত হইয়া থাকে তখন ‘গাছি’ ‘গাছা শব্দের অন্তস্থিত ইকার আকার লুপ্ত হইয়া যায়। যথা, লাঠিগাছটা মালাগাছটা ইত্যাদি । জীববাচক পদার্থ সম্বন্ধে ইহার ব্যবহার নাই। কেঁচোগাছি বলা চলে না। সরু জিনিস লম্বায় ছোটো হইলে তাহার সম্বন্ধে ব্যবহার হয় না। দড়িগাছা, কিন্তু গোফগাছা নয় । শলাগাছটা, কিন্তু ছুচগাছটা নয়। চুলগাছি যখন বলা হয় তখন লম্বাচুলই বুঝায়। যেখানে গাছি ও গাছ বসে সেখানে সর্বত্রই বিকল্পে টি ও টা বসিতে পারে —এবং কোনো কোনো স্থলে খানি ও খানা বসিতে পারে। টুকু টুকু শব্দ সংস্কৃত তত্ত্বক শব্দ হইতে উৎপন্ন। মৈথিলি সাহিত্যে তমুক শব্দ দেখিয়াছি। তিনিক এখনো হিন্দিতে ব্যবহৃত হয় । ইহার সগোত্র টুকরা’ শবদ বাংলায় প্রচলিত আছে । টুকু স্বল্পতাবাচক । সজীব পদার্থ সম্বন্ধে ইহার ব্যবহার নাই। ভেড়াটুকু গাধাটুকু হয় না। পরিহাসচ্ছলে মানুষটুকু বলা চলে। ক্ষুদ্রায়তন হইলেও এমন পদার্থ সম্বন্ধে ব্যবহৃত হয় না যাহার বিশেষ গঠন আছে। যেমন ইয়ারিংটুকু বলা যায় না, সোনাটুকু বলা যায়। পদ্মটুকু বলা श्वiश्च त्र1- চুনটুকু বলা যায়। পাগড়িটুকু বলা যায় না, রেশমটুকু বলা যায়। অর্থাৎ যাহাকে টুকরা করিলে তাহার বিশেষত্ব যায় না তাহার সম্বন্ধেই টুকু ব্যবহার করা চলে। কাগজকে টুকরা করিলেও তাহ কাগজ, কাপড়কে টুকরা করিলেও তাহা কাপড়, এক পুকুর জলও জল, এক ফোটা জলও জল, এইজন্ত কাগজটুকু কাপড়টুকু জলটুকু বলা যায় কিন্তু চৌকিটুকু খাটটুকু বলা যায় না।