পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বাংলা বহুবচন
৪১

সম্মুখ দিককার, পশ্চাৎ দিককার।

  আজকেকার কানকোর পরশুকার।

  এপারকার ওপারকার উপরকার নিচেকার তলাকার কোথাকার।

  দিনকার রাত্রিকার।

  এ-ধারকার ও-ধারকার সামনেকার পিছনকার।

  এ-হপ্তাকার ও-হপ্তাকার।

  আগেকার পরেকার কবেকার।

  একালকার সেকালকার।

  প্রথমকার শেষেকার মাঝেকার।

  ভিতরকার বাহিরকার।

  আগাকার গোড়াকার।

  সকালকার বিকালকার।

  এই তালিকা হইতে দেখা যায় সময় এবং অবস্থান (position)-সূচক বিশেষ্য ও বিশেষণের সহিত কার বিভক্তির যোগ।

  কিন্তু ইহাও দেখা যাইতেছে, তাহারও একটা নিদিষ্ট সীমা আছে। আমরা বলি— দিনের বেলা, দিনকার বেলা বলি না। অথচ সেদিনকার শব্দ প্রচলিত আছে। সময় শব্দের সম্বন্ধে সময়ের বলি, অথচ তৎপূর্বে এ সে প্রভৃতি সর্বনাম যোগ করিলে সম্বন্ধে কার বিভক্তি বিকল্পে প্রয়োগ হইয়া থাকে।

  ইহাতে প্রমাণ হয়, সময় ও দেশ সম্বন্ধে যেখানে বিশেষ সীমা নির্দিষ্ট হয়, সেইখানেই কার শব্দ প্রয়োগ হইতে পারে। সেদিনের কথা এবং সেদিনকার কথা— এ দুটা শব্দের একটি সূক্ষ্ম অর্থভেদ আছে। সেদিনের অর্থ অপেক্ষাকৃত অনির্দিষ্ট, সেদিনের কথা বলিতে অতীতকালের অনেক দিনের কথা বুঝাইতে পারে, কিন্তু সেদিনকার কথা বলিতে বিশেষ একটি দিনের কথা বুঝায়। যেখানে সেই বিশেষত্বের উপর বেশি জোর দিবার প্রয়োজন, কোনোমতে দেশ বা কালের একটি বিশেষ নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করিবার জো নাই, সেখানে শুদ্ধমাত্র এর বিভক্তি না দিয়া কার বিভক্তি হয়।

  অতএব বিশেষার্থবোধক, সময় এবং অবস্থানসূচক বিশেষ্য ও বিশেষণের উত্তরে সম্বন্ধে কার প্রত্যয় হয়।

  ইহার দুটি অথবা তিনটি ব্যতিক্রম চোখে পড়িতেছে। একজনকার