পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্বন্ধে কার به وعا কিন্তু ইহাও দেখা যাইতেছে, তাহারও একটা নির্দিষ্ট সীমা আছে । আমরা বলি, “দিনেরবেলা” দিনকার বেলা বলি না । অথচ "সেদিনকার” শবদ প্রচলিত আছে । “সময়” শব্দের সম্বন্ধে “সময়ের” বলি অথচ তৎপূৰ্ব্বে এ, সে প্রভৃতি সৰ্ব্বনাম যোগ করিলে সম্বন্ধে কার বিভক্তি বিকল্পে প্রয়োগ হইয়া থাকে । ইহাতে প্রমাণ হয়, সময় ও দেশ সম্বন্ধে যেখানে বিশেষ সীমা নিদিষ্ট হয়, সেইখানেই “কার” শব্দ প্রয়োগ হইতে পারে। “সেদিনের কথা” এবং “সেদিনকার কথ।” এ দুটা শব্দের একটি সূক্ষ্ম অর্থভেদ আছে । “সেদিনের” অর্থ অপেক্ষাকৃত অনির্দিষ্ট, সেদিনের কথা বলিতে অতীতকালের অনেক দিনের কথা বুঝাইতে পারে, কিন্তু “সেদিনকার কথা” বলিতে বিশেষ একটি দিনের কথা বুঝায়। যেখানে সেই বিশেষত্বের উপর বেশি জোর দিবার প্রয়োজন, কোনো মতে দেশ বা কালের একটি বিশেষ নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করিবার জো নাই, সেখানে শুদ্ধমাত্র “এর” বিভক্তি না দিয়া “কার” বিভক্তি হয় । তএব বিশেষার্থবোধক, সময় এবং অবস্থান সূচক বিশেষ্য ও বিশেষণের উত্তর সম্বন্ধে “কার” প্রত্যয় হয় । ইহার দুটি অথবা তিনটি ব্যতিক্রম চোখে পড়িতেছে। “একজনকার দুইজনকার” ইত্যাদি, ইহা মনুষ্য সংখ্যাবাচক । দেশকালবাচক নহে। মকুষ্য সমষ্টিবাচক “সকলকার” এবং “সত্যকার” । আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, “সকলকার” হয় কিন্তু সমস্তৃকার হয় না, ( প্রাচীন বাংলায় “সভাকার” ) “সত্যকার” হয় কিন্তু “মিথ্যাকার”