পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

위e শব্দতত্ত্ব বঁাচাইয়াও ভাষাকে বধ করিতে ছাড়েন না । ইংরেজগণ তাহাতে অত্যন্ত কৌতুক বোধ করেন। সেইজন্য আমাদেরও বড়ো ইচ্ছা করে, যে সকল ইংরেজ এদেশে স্বদীর্ঘকাল বাস করিয়া, দেশী ভাষা শিক্ষার বিশেষ চেষ্টা করিয়া ও সুযোগ পাইয়াও সে ভাষা সম্বন্ধে ভুল করেন র্তাহাদের প্রতি হাস্যরস বর্ষণ করিয়া পাণ্টাজবাবে গায়ের ঝাল মিটাই । সন্ধান করিলে এ সম্বন্ধে দুই একটা বড়ো বড়ো দৃষ্টান্তও পাওয়া যায়। বাবু ইংরেজির আদর্শ প্রায় অশিক্ষিত দরিদ্র উমেদারদিগের দরখাস্ত হইতে সংগ্রহ করা হইয়া থাকে। কিন্তু তাহাদের সহিত বাংলার ভূতপূৰ্ব্ব সিবিলিয়ান জন বীম সাহেবের তুলনা হয় না। বীম সাহেব চেষ্টা করিয়া বাংলা শিখিয়াছেন ; বাংলা দেশেই র্তাহার যৌবন ও প্রৌঢ়বয়স যাপন করিয়াছেন ; বহু বৎসর ধরিয়া বাঙালি সাক্ষীর জবানবন্দী ও বাঙালি মোক্তারের আবেদন শুনিয়াছেন এবং বাঙালি সাহিত্যেরও রীতিমতো চর্চা করিয়াছেন এরূপ শুনা যায় । কেবল তাহাই নয়, বীমস্ সাহেব বাংলা ভাষার এক ব্যাকরণও রচনা করিয়াছেন । বিদেশী ভাষার ব্যাকরণ রচনা স্পৰ্দ্ধার বিষয় ; পেটের দায়ে দরখাস্ত রচনার সহিত ইহার তুলনা হইতে পারে না । অতএব সেই ব্যাকরণে যদি পদে পদে এমন সকল ভুল দেখা যায়, যাহা বাঙালি মাত্রেরই কাছে অত্যন্ত অসঙ্গত ঠেকে, তবে সেই সাহেবি অজ্ঞতাকে পরিহাস করিবার প্রলোভন সম্বরণ করা কঠিন হইয়া উঠে।