পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>२ শব্দতত্ত্ব মেওয়ারি তনো, তণু এবং বহুবচনে তণ ব্যবহার হইয়া থাকে । তণার উত্তর কের শব্দ যোগ করিলে তণাকের রূপে দিগের শব্দের মিল পাওয়া যায় । প্রাচীনকাব্যে অধিকাংশ স্থলে “সব” শব্দ যোগ করিয়া বহুবচন নিম্পন্ন হইত। এখনও বাংলায় সব শব্দের যোগ চলিত আছে। কাব্যে তাহার দৃষ্টান্ত “পাখীসব করে রব রাতি পোহাইল”। কিন্তু কথিত ভাষায় উক্তপ্রকার কাব্যপ্রয়োগের সহিত নিয়মের প্রভেদ দেখা যায়। কাব্যে আমাসব, তোমাসব, পাখীসব প্রভৃতি কথায় দেখা যাইতেছে সব শব্দই বহুবচনের একমাত্র চিহ্ন, কিন্তু কথিত ভাষায় অন্ত বহুবচনবিভক্তির পরে উহা বাহুল্যরূপে ব্যবহৃত হয় । আমরাসব, তোমরাসব, পার্থীরাসব। যেন আমরা, তোমরা, পার্থীরা “সব” শব্দের বিশেষণ । মৈথিলি ভাষায় “সব” শব্দ যোগে বহুবচন নিম্পন্ন হয় । কিন্তু তাহার প্রয়োগ আমাদের প্রাচীন কাব্যের ন্যায়। নেনাসভ অর্থে বালকেরা সব। নেনিসভ = বালিকারা সব । কিন্তু এসম্বন্ধে মৈথিলীর সহিত বাংলার তুলনা হয় না। কারণ, মৈথিলীতে অন্য কোনো প্রকার বহুবচনবাচক বিভক্তি নাই । বাংলায় “রা” বিভক্তিযোগে বহুবচন সমস্ত গৌড়ীয় ভাষা হইতে স্বতন্ত্র, কেবল নেপালি “হেরু" বিভক্তির সহিত তাহার সাদৃত আছে। কিন্তু “রা” বিভক্তিযোগে বহুবচন কেবল সচেতন পদার্থ সম্বন্ধেই খাটে। আমরা বাংলায় ফলের পাতারা বলি না। এই