পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So 8 শব্দতত্ত্ব একটা বড়ো । উকারে অব্যক্তপ্রায় প্রকাশ, আকারে পরিস্ফুট প্রকাশ । আমরা এতক্ষণ যে সকল জোড়া কথার দৃষ্টান্ত লইয়া আলোচনা করিলাম তাহার ধ্বন্যাত্মক । আর এক রকমের জোড়া কথা আছে তাহার মূল শব্দটি অর্থসূচক এবং দোসর শব্দটি মূল শব্দেরই অর্থহীন বিকার। যেমন চুপচাপ ঘুষঘাষ, তুকতাক ইত্যাদি। চুপ, ঘুষ এবং তুক এ তিনটে শব্দ আভিধানিক-ইহারা অর্থহীন ধ্বনি নহে—ষ্টহাদের সঙ্গে "চাপ” “ঘাষ” ও “তাক এই তিনটে অর্থহীন শব্দ শুদ্ধমাত্র ইঙ্গিতের কাজ করিতেছে । জলের ধারেই যে গাছটা দাড়াইয়া আছে সেই গাছটার সঙ্গে সঙ্গে তাহার সংলগ্ন বিকৃত ছায়াটাকে একত্র করিয়া দেখিলে যেমন হয়, বাংলা ভাষার এই কথাগুলাও সেইরূপ : চুপ কথাটার সঙ্গে তাহার একটা বিকৃত ছায় যোগ কবিয়া দিয়৷ চুপচাপ হইয়া গেল। ইহাতে অর্থেরও একটু অনিদিষ্টভাবের বিস্তৃতি হইল। যদি বলা যায় কেহ চুপ করিয়া আছে তবে বুঝায় সে নি:শব্দ হইয়া আছে— কিন্তু যদি বলি চুপচাপ আছে তবে বুঝায় লোকটা কেবলমাত্র নিঃশব্দ নহে একপ্রকার নিশ্চেষ্ট হইয়াও আছে। একটা নিদিষ্ট অর্থের পশ্চাতে একটা অনির্দিষ্ট আভাস জুড়িয়া দেওয়া এই শ্রেণীর জোড় কথার কাজ । ছায়াটা আসল জিনিষের চেয়ে বড়োই হইয়া থাকে। অনির্দিষ্টটা নিৰ্দ্দিষ্টের চেয়ে অনেক মস্ত। আকার স্বরটাই বাংলায় বড়োত্বের স্বর লাগাইবার জন্য আছে । আকার স্বরবর্ণের যোগে ঘুষঘাষের ঘাষ,