পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

le/* অভ্যাসের আরামে ও অহঙ্কারে ঘা লাগিলেও সেটাকে একেবারে উড়াইয়া দিতে পারি না । 喃 আসল কথা, সংস্কৃত ভাষা যে-অংশে বাংলা ভাষার সহায় সেংশে তাহাকে লইতে হইবে, যে-অংশে বোঝ। সে-অংশে তাহাকে ত্যাগ করিতে হইবে । বাংলাকে সংস্কৃতের সস্তান বলিয়াই যদি মানিতে হয় তবে সেই সঙ্গে একথাও মান চাই যে তার ষোলো বছর পার হইয়াছে, এখন আর শাসন চলিবে না, এখন মিত্রতার দিন । কিন্তু যতদিন বাংলা বইয়ের ভাষা চলিত ভাষার ঠাট না গ্রহণ করিবে ততদিন বাংলা ও সংস্কৃত ভাষার সত্য সীমানা পাকা হইতে পারিবে না। ততদিন সংস্কৃত বৈয়াকরণের বর্গির দল আমাদের লেখকদের ত্রস্ত করিয়া রাখিবেন । প্রাকৃত বাংলার ঠাটে যখন লিখিব তখন স্বভাবতই স্বসঙ্গতির নিয়মে সংস্কৃত ব্যাকরণের প্রভাব বাংলা ভাষার বেড়া ডিঙাইয়। উৎপাত করিতে কুষ্ঠিত হইবে । পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, বেড়ার ভিতরকার গাছ যেখানে একটুআধটু ফাক পায় সেইখান দিয়াই আলোর দিকে ডালপালা মেলে, তেমনি করিয়াই বাংলার সাহিত্যভাষা সংস্কৃতের গরাদের ভিতর দিয়া, চলতি ভাষার দিকে মাঝে মাঝে মুখ বাড়াইতে স্বরু করিয়াছিল । তা লইয়া তাহাকে কম লোকনিন্দা সহিতে হয় নাই । এই জন্যই বঙ্কিমচন্দ্রের অভু্যদয়ের দিনে তাকে কটুকথা অনেক সহিতে হইয়াছে। তাই মনে হয় আমাদের দেশে এই কটু কথার হাওয়াটাই বসন্তের দক্ষিণ হাওয়া । ইহা কুঞ্জবনকে নাড়া দিয়৷