পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাষার খেয়াল Ꮌbr© বাঙালি ছেলের মুখ দিয়েও বের হবে না, “টেলিফোনিয়েছি” বা “সাইক্লিয়েছি”। বাংলা গদ্যের অটুট শাসন কালক্রমে কিছু কিছু হয়তে বা বেড়ি আলগা ক’রে আচার ডিঙোতে দেবে। বাংলায় কাব্য-সাহিত্যই পুরাতন, এই জন্যেই প্রকাশের তাগিদে কবিতায় ভাষার পথ অনেক বেশি প্রশস্ত হয়েছে। গদ্য-সাহিত্য নূতন, এই জন্তে শব্দস্থষ্টির কাজে তার আড়ষ্টভ যায় নি। তবু ক্রমশ তার নমনীয়তা বাড়বে আশা করি । এমন কি, আজই যদি কোনো তরুণ লেখক লেখেন, “মাইকেল বাংলা-সাহিত্যে নূতন সম্পদের ভাণ্ডার উদঘাটিলেন” তা নিয়ে প্রবীণর খুব বেশি উত্তেজিত না হোতে পারেন। ভাবীকালে আধুনিকেরা কতদূর পর্য্যস্ত স্পদ্ধিয়ে উঠবেন বলতে পারি নে কিন্তু অন্তত এখনি তার “জিজ্ঞাসা করিলেন”-এর জায়গায় যদি জিজ্ঞাসিলেন” চালিয়ে দেন তাহোলে বাংলা ভাষা কৃতজ্ঞ হবে । “লজ্জ করবার কারণ নেই” এটা আমরা লিখে থাকি । “লজ্জাবার কারণ নেই” লেখাট নির্লজ্জত । এমন স্থলে ঐ জোড় ক্রিয়াপদট। বর্জন করাই শ্রেয় মনে করি । লিখলেই হয় “লজ্জার কারণ নেই”। “প্রীফ সংশোধন করবার বেলায়” কথাটা ংশোধনীয়, বল ভালো “সংশোধনের বেলায়: । সহজ ব’লেই গদ্যে আমরা পূরো মন দিইনে, বাহুল্য শব্দ বিনা বাধায় যেখানে সেখানে ঢুকে পড়ে। আমার রচনায় তার ব্যতিক্রম আছে এমন অহঙ্কার আমার পক্ষে অত্যুক্তি হবে । ভাষার খেয়াল সম্বন্ধে একটা দৃষ্টাস্ত আমার প্রায় মনে পড়ে।