পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রিশিষ্ট্র শবদ-চয়নঃ বাংলা ভাষায় গন্ত লিখতে নতুন শব্দের প্রয়োজন প্রতিদিনই ঘটে। অনেক দিন ধ’রে অনেক রকম লেখা লিখে এসেছি। সেই উপলক্ষ্যে অনেক শব্দ আমাকে বানাতে হোলো। কিন্তু প্রায়ই মনের ভিতরে খটকা থেকে যায়। মুবিধা এই যে, বার বার ব্যবহারের দ্বারাই শব্দবিশেষের অর্থ আপনি পাকা হয়ে ওঠে, মূলে যেটা অসঙ্গত, অভ্যাসে সেটা সঙ্গতি লাভ করে। তৎসত্ত্বে সাহিত্যের হট্টগোলে এমন অনেক শব্দের আমদানি হয়, যা ভাষাকে যেন চিরদিনই পীড়া দিতে থাকে। যেমন সহানুভূতি । এটা sympathy শব্দের তর্জমা । ‘সিম্প্যাথি’-র গোড়াকার অর্থ ছিল ‘দরদ'। ওটা ভাবের আমলের কথা, বুদ্ধির আমলের নয়। কিন্তু ব্যবহারকালে ইংরেজিতে ‘সিম্প্যাথি’-র মূল অর্থ আপন ধাতুগত সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তাই কোনো একটা প্রস্তাব সম্বন্ধেও সিম্প্যাথি-র কথা শোনা যায় । বাংলাতেও আমরা বলতে আরম্ভ করেছি—‘এই প্রস্তাবে আমার সহানুভূতি আছে । বলা উচিত, ‘সম্মতি আছে’, বা “আমি এর সমর্থন করি’ ।

  • সন ১৩৩৬, ২৫শে মাখ, ৰঙ্গীয়-সাহিত্য পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে পঠিত ।