পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা উচ্চারণ (? উচ্চারণ “শ শয়ের ন্যায় । “ব্যমু” লিখি কিন্তু পড়ি “ব্যায়” । অথচ “অব্যয়” শব্দে “বা”য়ের উচ্চাৰণ “বব”য়ের মতো। আমরা লিখি “গর্দভ, পড়ি "গদ্ধোব । লিখি “সহ” পড়ি "সোজ ঝো”। এমন কত লিখিব । আমরা বলি আমাদের তিনটে “স”য়ের উচ্চারণের কোনো তফাৎ নাই ; বাংলায় সকল “স”ই তালব্য “শ”য়ের ন্যায় উচ্চারিত হয়—কিন্তু আমাদের যুক্ত অক্ষর উচ্চারণে এ কথা খাটে না । তার সাক্ষ্য দেখো “কষ্ট” শব্দ এবং “ব্যস্ত” শব্দের দুই শয়ের উচ্চারণের প্রভেদ আছে। প্রথমটি তালব্য শ দ্বিতীয়টি দন্ত্য স । “আসতে হবে” এবং “আশ্চর্য্য” এই উভয় পদে দন্ত্য স ও তালব্য শয়ের প্রভেদ রাখা হইয়াছে । “জ”য়ের উচ্চারণ কোথাও বা ইংরাজি z এর মতো হয়—যেমন “লুচি ভাজ তে হবে” এস্থলে “ভাজ তে শবের “জ” ইংরাজি "z"-এর মতো । সচরাচর আমাদের ভাষায় অন্ত্যস্থ বয়ের আবশ্যক হয় না বটে, কিন্তু “জিহব।” অথবা “আহবান” শব্দে অস্ত্যস্থ ব ব্যবহৃত হয়। আমরা লিখি “র্তাহারা” কিন্তু উচ্চারণ করি “তাহারা” অথবা “র্তাহারা”। এমন আরও অনেক দৃষ্টান্ত আছে। বাংলা ভাষায় এইরূপ উচ্চারণের বিশৃঙ্খলা যখন নজরে পড়িল, তখন আমার জানিতে কৌতুহল হইল এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে একটা নিয়ম আছে কিনা। আমার কাছে তখন খানদুই বাংলা অভিধান ছিল । মনোযোগ দিয়া তাহা হইতে উদাহরণ সংগ্ৰহ করিতে লাগিলাম । যখন আমার খাতায় অনেকগুলি