পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা উচ্চারণ 속 বর্ণ, উচ্চারণকালে মাঝে মাঝে ও কিম্বা ওকারান্ত হইয়া যায়। "যেমন— o অতি, কলু, ঘড়ি, কল্য, মরু, দক্ষ ইত্যাদি । এরূপ স্থানে “অ’ যে “ও” হইয়া যায়, তাহাকে হ্রস্ব “ও” বলিলেও হয় । দেখা গিয়াছে অ কেবল স্থানবিশেষেই ও হইয় যায়, সুতরাং ইহার একটা নিয়ম পাওয়া যায়। ১ম নিয়ম । ই, (হ্রস্ব অথবা দীর্ঘ ) অথবা উ, (হ্রস্ব অথবা দীর্ঘ ) কিম্বা ইকারান্ত উকারাস্ত ব্যঞ্জনবর্ণ পরে থাকিলে তাহার পূৰ্ব্ববর্তী আকারের উচ্চারণ ও হইবে। যথা অগ্নি, অগ্রিম, কপি, তরু, অঙ্গুলি, অধুনা হতু ইত্যাদি । २अ | ये ফলাবিশিষ্ট ব্যঞ্জন বর্ণ পরে থাকিলে “অ’ “ও” হইয়া যাইবে । এ নিয়ম প্রথম নিয়মের অন্তর্গত বলিলেও হয়, কারণ য ফলা “ক্ট” এবং অয়ের যোগ মাত্র । উদাহরণ—গণ্য, দস্ত্য, লভ্য ইত্যাদি । “দস্ত” এবং “দস্ত্য ন” এই দুই শব্দের উচ্চারণের প্রভেদ লক্ষ্য করিয়| দেখো । ৩য় । ক্ষ পরে থাকিলে তৎপূর্ববর্তী “অ” “ও” হইয়। যায়। যথা—অক্ষর, কক্ষ, লক্ষ, পক্ষ ইত্যাদি। ক্ষ শব্দের উচ্চারণ বোধ করি এককালে কতকটা ই কার-ঘেষা ছিল, তাই এই অক্ষবের নাম হইয়াছে ক্ষিয় । পূৰ্ব্ববঙ্গের লোকেরা এই “ক্ষ”র সঙ্গে য ফলা যোগ করিযী উচ্চারণ করেন, এমন কি “ক্ষ”র পূৰ্ব্বেও ঈষৎ ইকারের আভাস দেন । কলিকাতা অঞ্চলে “লক্ষ টাকা” বলে, র্তাহারা বলেন “লৈক্ষ্য টাকা ।”