১৭আর চল্লিশ দিন পর্য্যন্ত পৃথিবীতে জলপ্লাবন হইল, তাহাতে জল বৃদ্ধি পাইয়া জাহাজ ভাসাইলে ১৮ তাহ মৃত্তিক ছাড়িয়া উঠিল। ১৮পরে জল প্রবল হইয়া পৃথিবীতে অতিশয় বৃদ্ধি পাইল, এবং জাহাজ জলের ১৯ উপরে ভাসিয়া গেল। ১৯আর পৃথিবীতে জল অত্যন্ত প্রবল হইল, আকাশমণ্ডলের অধঃস্থিত সকল মহা২০ পর্ব্বত মগ্ন হইল। ২০তাহার উপরে পনের হাত জল ২১ উঠিয়া প্রবল হইল, পর্ব্বত সকল মগ্ন হইল। ২১তাহাতে ভূচর যাবতীয় প্রাণী—পক্ষী, গ্রাম্য ও বন্য পশু, ভূচর সরীস্বপ সকল এবং মনুষ্য সকল মরিল। ২২স্থলচর যত প্রাণীর নাসিকাতে প্রাণবায়ুর সঞ্চার ২৩ ছিল, সকলে মরিল। ২৩এইরূপে ভূমণ্ডল-নিবাসী সমস্ত প্রাণী—মনুষ্য, পশু, সরীস্বপ জীব ও আকাশীয় পক্ষী সকল উচ্ছিন্ন হইল, পৃথিবী হইতে উচ্ছিন্ন হইল, কেবল নোহ ও তাঁহার সঙ্গী জাহাজস্থ প্রাণীর ২৪ বাচিলেন। ২৪আর জল পৃথিবীর উপরে এক শত পঞ্চাশ দিন পর্য্যন্ত প্রবল থাকিল।
৮১আর ঈশ্বর নোহকে ও জাহাজে স্থিত তাহার সঙ্গী পশ্বাদি যাবতীয় প্রাণীকে স্মরণ করিলেন, ঈশ্বর পৃথিবীতে বায়ু বহাইলেন, তাহাতে জল থামিল। ২আর জলধির উলুই ও আকাশের বাতায়ন সকল বদ্ধ ৩ এবং আকাশের মহাবৃষ্টি নিবৃত্ত হইল। ৩আর জল ক্রমশঃ ভূমির উপর হইতে সরিয়া গিয়া এক শত ৪ পঞ্চাশ দিনের শেষে হ্রাস পাইল। ৪তাহাতে সপ্তম মাসে, সপ্তদশ দিনে অররটের পকতের উপরে ৫ জাহাজ লাগিয়া রহিল। ৫পরে দশম মাস পর্য্যন্ত জল ক্রমশঃ সরিয়া হ্রাস পাইল; ঐ দশম মাসের প্রথম দিনে পর্ব্বতগণের শৃঙ্গ দেখা গেল।
৬অীর চল্লিশ দিন গত হইলে নোহ আপনার ৭ নির্ম্মিত জাহাজের বাতায়ন খুলিয়া, ৭একটা দাঁড়কাক ছাড়িয়া দিলেন; তাহাতে সে উড়িয়া ভূমির উপরিস্থ জল শুষ্ক না হওয়া পর্য্যন্ত ইতস্ততঃ গতায়াত করিল। ৮আর ভূমির উপরে জল হ্রাস পাইয়াছে কি না, তাহ জানিবার জন্য তিনি আপনার নিকট হইতে এক ৯ কপোত ছাড়িয়া দিলেন। ৯তাহাতে সমস্ত পৃথিবী জলে আচ্ছাদিত থাকতে কপোত পদার্পণের স্থান পাইল ন, তাই জাহাজে তাহার নিকটে ফিরিয়া আসিল। তখন তিনি হাত বাড়াইয় তাহাকে ধরিলেন ও জাহাজের ভিতরে আপনার নিকটে রাখিলেন। ১০পরে তিনি আর সাত দিন বিলম্ব করিয়া জাহাজ ১১ হইতে সেই কপোত পুনকার ছাড়িয়া দিলেন, ১১এবং কপোতটা সন্ধ্যাকালে তাহার নিকটে ফিরিয়া আসিল। আর দেখ, তাহার চঞ্চুতে জিতবৃক্ষের একটী নবীন পত্র ছিল; ইহাতে নোহ বুঝিলেন, ভূমির উপরে জল ১২ হ্রাস পাইয়াছে। ১২পরে তিনি আর সাত দিন বিলম্ব করিয়া সেই কপোত ছাড়িয়া দিলেন, তখন সে তাহার ১৩ নিকটে আর ফিরিয়া আসিল না।
১৩[ নোহের বয়সের ] ছয় শত এক বৎসরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে১৪পরে দ্বিতীয় মাসের সাতাইশ দিনে ভূমি শুষ্ক হইল।
নোহের সহিত কৃত ঈশ্বরের নিয়ম।
১৫পরে ঈশ্বর নোহকে কহিলেন, ১৬তুমি আপনার স্ত্রী, পুত্রগণ ও পুত্রবধূগণকে সঙ্গে লইয়া জাহাজ হইতে ১৭ বাহিরে যাও। ১৭আর তোমার সঙ্গী পশু, পক্ষী, ও ভূচর সরীস্বপ প্রভৃতি মাংসময় যত জীবজন্তু আছে, সেই সকলকে তোমার সঙ্গে বাহিরে আন, তাহারা পৃথিবীকে প্রাণিময় করুক, এবং পৃথিবীতে প্রজীবন্ত ও ১৮ বহুবংশ হউক। ১৮তখন নোহ আপনার পুত্রগণ এবং আপনার স্ত্রী ও পুত্রবধূগণকে সঙ্গে লইয়া বাহির ১৯ হইলেন। ১৯আর স্ব স্ব জাতি অনুসারে প্রত্যেক পশু, সরীস্বপ জীব ও পক্ষী, সমস্ত ভূচর প্রাণী জাহাজ হইতে বাহির হইল।
২০পরে নোহ সদাপ্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞবেদি নির্ম্মাণ করিলেন, এবং সর্ব্বপ্রকার শুচি পশুর ও সর্ব্বপ্রকার শুচি পক্ষীর মধ্যে কতকগুলি লইয়া বেদির উপরে ২১ হোম করিলেন। ২১তাহাতে সদাপ্রভু তাহার সৌরভ আম্রাণ করিলেন, আর সদাপ্রভু মনে মনে কহিলেন, আমি মনুষ্যের জন্য ভূমিকে আর অভিশাপ দিব না, কারণ বাল্যকাল অবধি মনুষ্যের মনস্কল্পনা দুষ্ট; যেমন করিলাম, তেমন আর কখনও সকল প্রাণীকে ২২ সংহার করিব না। ২২যাবৎ পৃথিবী থাকিবে, তাবৎ শস্ত বপনের ও শস্ত ছেদনের সময়, এবং শীত ও উত্তাপ, এবং গ্রীষ্মকাল ও হেমন্তকাল, এবং দিবা ও রাত্রি, এই সকলের নিবৃত্তি হইবে না।
৯১পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাহার পুত্রগণকে এই আশীর্ব্ববাদ করিলেন, তোমরা প্রজীবন্ত ও বহুবংশ ২ হও, পৃথিবী পরিপূর্ণ কর। ২পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী ও আকাশের যাবতীয় পক্ষী তোমাদের হইতে ভীত ও ত্রাদযুক্ত হইবে; সমস্ত ভূচর জীব ও সমুদ্রের সমস্ত মৎস্য শুদ্ধ সে সকল তোমাদেরই হস্তে সমর্পিত। ৩প্রত্যেক গমনশীল প্রাণী তোমাদের খাদ্য হইবে . আমি হরিৎ ওষধির ন্তায় সে সকল তোমাদিগকে ৪ দিলাম। ৪কিন্তু সপ্রাণ অর্থাৎ সরক্ত মাংস ভোজন ৫ করিও না। ৫আর তোমাদের রক্তপাত হইলে আমি তোমাদের প্রাণের পক্ষে তাহার পরিশোধ অবশ্য লইব; সকল পশুর নিকটে তাহার পরিশোধ লইব, এবং মনুষ্যের ভ্রাতা মনুষ্যের নিকটে আমি মনুষ্যের ৬ প্রাণের পরিশোধ লইব। ৬যে কেহ মনুষ্যের রক্তপাত করিবে, মনুষ্য কর্তৃক তাহার রক্তপাত করা যাইবে: কেননা ঈশ্বর আপন প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে নির্ম্মাণ ৭ করিয়াছেন। ৭তোমরা প্রজীবন্ত ও বহুবংশ হও, পৃথিবীকে প্রাণিময় কর, ও তন্মধ্যে বর্দ্ধিষ্ণু হও।
৮পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁহার সঙ্গী পুত্রগণকে