পাতা:বাখতিন - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৯৬২...: সে-সময়কার বিখ্যাত সাহিত্য-গবেষক ভ্লাদিমির নিকোলায়েভিচ টারবিন সারান্‌স্কে যাচ্ছেন। বাখতিনের সঙ্গে আলাপ করে এত অভিভূত হচ্ছেন যে কিছুদিন পরে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সাফল্যপ্রসূ আলোচনাচক্রে তিনি বাখতিনের কথা বিশদভাবে বিশ্লেষণ করছেন। ফলে তাঁর ছাত্রী এল. এম. মেলিখোবা নিয়মিত ভাবে বাখতিনের কাছে যেতে শুরু করছেন। এবছর বাখতিনের লেখাপত্র প্রকাশ করার তাগিদ গুণমুগ্ধদের মধ্যে বহুগুণ বেড়ে গেছে। তাঁরা নিজেদের মধ্যে কিছু কিছু দায়িত্ব ভাগ করে নিচ্ছেন। কোঝিনোভ ও বোচারোভ বাখতিনের বই প্রকাশ এবং তাঁর খসড়া পাণ্ডুলিপি দেখাশোনার কাজ করছেন, টারবিন তাঁকে মস্কোয় পুনর্বাসন দেওয়ার সমস্যা নিয়ে ভাবছেন এবং মেলিখোবা বাখতিন-দম্পতির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রয়োজন দেখাশোনা করছেন। এর আগের বছর কোঝিনোভ ডস্টয়েভস্কি বিষয়ে পরিমার্জিত বইটি প্রকাশ করার জন্যে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে চেষ্টা করে গেছেন। ইতালীয় প্রকাশন সংস্থার সঙ্গে চুক্তিপত্র মস্কোর কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে তাঁদের প্রভাবিত করতে পর্যন্ত দ্বিধা করেননি। নানা টালবাহানার পরে শেষপর্যন্ত তাঁর উদ্যম সার্থক হচ্ছে। বইটির প্রকাশ ত্বরান্বিত করার জন্যে কোঝিনোভ সংবাদপত্রের মধ্য দিয়েও প্রচার চালিয়েছেন।
১৯৬৩...: ২৬ সেপ্টেম্বর বাখতিন কোঝিনোভকে একটি চিঠিতে জানাচ্ছেন যে তিনি ডস্টয়েভস্কি ও তার নন্দন-এর নতুন সংস্করণের আগাম কপি পেয়ে যাবেন। কোঝিনোভের অদম্য চেষ্টার ফলে এই আশ্চর্য ঘটনা ঘটতে পেরেছে।
১৯৬৪...: একটি বিশেষ সন্ধ্যায় মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থ প্রকাশ সম্পর্কিত অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে রাবেলে-সম্পর্কিত বইটি সহ অন্যান্য রচনা প্রকাশের উদ্যমও চলছে। পরিমার্জনের কাজে কোঝিনোভ সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছেন।
১৯৬৫...: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পরেও সারান্‌স্কের বাইরে আসা সম্ভব হয়নি মূলত আবাসন সম্পর্কিত সোভিয়েত নিয়মের জন্যে। ততদিনে তিনি অবশ্য ছাত্র ও সমকর্মীদের কাছে ঈশ্বরপ্রতিম হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্যে বাখতিন তাদের সময় দিতে কার্পণ্য করেননি। এদিকে স্বাস্থ্য ক্রমশ বেশি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। এবছর নভেম্বরে কোঝিনোভকে লেখা একটি চিঠিতে পরিমার্জনের জন্যে তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন বাখতিন।
১৯৬৬...: বাখতিন ও এলেনা—দুজনেরই স্বাস্থ্যর দ্রুত অবনতি ঘটছে। বাড়ির বাইরে যাওয়া ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে। তাঁর অন্য পা-ও পুরোপুরি অকেজো হয়ে গেছে। এবছর দু’জনকেই বেশ কয়েকবার হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে গুণমুগ্ধদের সাহায্য যদিও অবারিত ছিল। মস্কোর তরুণ, শিষ্যেরা বুঝতে পারছেন যে দম্পতিকে এবার মস্কোয় উপযুক্ত পরিচর্যার মধ্যে রাখতে হবে। নিজের উদ্বেগজনক হৃদ্‌পীড়া সত্ত্বেও এলেনা সমস্ত কাজই নিজে করতে চাইতেন। গার্হস্থ্য কাজে গুণমুগ্ধদের কোনও ধরনের সাহায্য তিনি নিতে
২৪