পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২০৮
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

আর্টিষ্টে আর মুন্দরে লুকোচুরির লীলা চলে অনেক সময়ে কিন্তু সে তুই ছেলেতে পরিচয় হবার পরে খেলার মতে, ইচ্ছা করে গোপন থেকে পদর্ণ টেনে দিয়ে খেলা,—তার মধ্যে রস আছে বলেই খেলা চলে। যে সুন্দরকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সন্ধান করছে তার ছুটোছুটির সঙ্গে এ খেলার তফাৎ রয়েছে । ... • পিপড়ে ছুটোছুটি করে চিনির সন্ধানে কিন্তু মধু আহরণে মৌমাছির ছুটোছুটি সে একটি স্বতন্ত্র ব্যাপার। পিপড়ের চিনি ংগ্রহের সঙ্গে তার পেটের যোগ, চিনি না পেলে সে মরা ইদুরে গিয়ে চিমটি বসায় কিন্তু পেট খুব তাড়া দিলেও মাছের আর মাংসের জুস দিয়ে মৌচাক ভতি করতে চলে না মৌমাছি। মৌমাছি কি খেয়ে বঁাচে এবং আর্টিষ্ট তারাও কি খেয়ে জীবনধারণ করে তার রহস্য এখনো ভেদ হয়নি। শুধু এটুকু বলা যায় যে তারা পিপড়ের মতো মুন্দর সামগ্রীকে পেটের তাড়নার সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে সুন্দরের সন্ধানে বার হয় না, ফুল ফোটে ওধারে সুন্দর হয়ে খবর আসে বাতাসে তাদের কাছে, চলে যায় তার সুন্দরের নিমন্ত্রণে, সন্ধানে নয়। মৌচাকে যেমন মধু তেমনি ছবি মূতি কবিতা গান কত কি পাত্রে ধরলে মানুষ সুন্দরকে, ওদিকে আবার বিশ্বজগতে সুন্দর নিজেকে ধরে দিলেন আপনা হতেই ফুলে ফলে লতায় পাতায় জলে স্থলে আকাশে কত স্থানে তার ঠিকানা নেই, এত সুন্দর আয়োজন কিন্তু ভোগে এল শুধু ছ'চারজনের, আর বাকি অধিকাংশ তারা এ সবের মধ্যে থেকে শুধু সৌন্দর্যতত্ত্বই বার করতে বসে গেল। সেই বেজান্‌ সহরের কথা মনে হয় ; উপবনে সেখানে পাখী গাইলো ফুল ফুটলো মুকুল খুল্লো ফল ধরলে পাতা ঝরলে, সবই সুন্দরভাবে হয়ে চল্লো দিনে রাতে, কিন্তু সহরের কোনো মানুষ এগুলো থেকে কিছু নিতে পারলে না, পাথরের চেয়েও পাথর হয়ে বসে রইলো, শুধু ছ'চারজন পথিক দুটো একটা হতভাগা ভিখিরী নয় পাগল তারাই কেবল থেকে থেকে এল গেল সেই দেশের সেই বাগানে যেখানে দৃষ্টি-ভোলানো সুন্দরের সামনে মুখ করে বসে আছে মুক অন্ধ বধির নিশ্চল মানুষের দল ঘোলা চোখ মেলে । ০যার চোখ সুন্দরকে দেখতে পেলে না আজন্ম তার চোখের উপরে জ্ঞানাঞ্জন-শলাকা ঘষে ঘষে ক্ষইয়ে ফেল্পেও ফল পাওয়া যায় না, আবার