বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৪
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

সবাই দেখছে সেটিকে নিছক সুন্দর। ছেলে ঘোড়াটা পেয়ে খেলছে সংসারের জিনিষ নয়-ছয় করছে না, হঠাৎ পড়ে’ গিয়ে হাত পা ভাঙ্গছে না, এই জন্য বলতে পারি ঘোড়াটি মঙ্গলের কারণ; কিন্তু সত্য তাকে তো ঘোড়ার মধ্যে কোথাও ধরা যাচ্ছে না, ছেলের কাছে যে সেটা সত্যি ঘোড়া তারও প্রমাণ পাচ্ছিনে কেননা শুনছি ছেলেই দিচ্ছে খেলনাটার নাম ‘বাঘমামা’। মতের বাঁধন অস্বীকার করে’ খেলার ঘোড়া অসুন্দর হ’ল না, সুন্দরই ঠেকলো ছেলের ও ঠাকুরদাদার চোখে।

 সুন্দর সে শুধু শুধুই সুন্দর, এ কারণে সে কারণে সুন্দর নয় এটা যেমন সত্যি তেমনি সত্যি অসুন্দর সে অসুন্দর বলেই অসুন্দর।

“নরা গজা বিশে শয়
তার অর্দ্ধ বাঁচে হয়।
বাইশ বল্‌দা তের ছাগলা
তার অর্দ্ধ বরা পাগলা।”

 এর মধ্যে সত্য অনেকখানি রয়েছে, মঙ্গলের কারণও এটার যথেষ্ট বিদ্যমান, কিন্তু সুন্দর কবিতা তো এটা হ’ল না!

“দ্বাদশ অঙ্গুলি কাঠি, সূর্যমণ্ডলে দিয়া দিঠি।
রবি কুড়ি সোমে ষোল, পঞ্চদশ মঙ্গলে ভাল।
বুধ বৃহস্পতি এগার বারো, শুক্র শনি চৌদ্দ তেরো।
হাঁচি জেঠি পড়ে যবে, অষ্টগুণ লভ্য হবে।”

 পূর্ণ মঙ্গলের আবির্ভাব এখানে একথা অস্বীকার করতে চাইনে, সত্যও আছে ধরে’ নিলেম কিন্তু সুন্দর তাঁর তো দেখা নেই বলতে হ’ল!

 এইবার একটি সুন্দর বচন শোনাই—

“ডাকয়ে পক্ষী না ছাড়ে বাসা
উড়িয়ে বসে’ খাবে করি আশা
ফিরে যায় নিজালয় না পায় দিশা
খনা ডেকে বলে সেই সে ঊষা।”

 ঊষার সহজ সুন্দর বর্ণনা, এর মধ্যে কতটা সত্য কতটা মঙ্গল এ সব মাপতে গেলে এর রসভঙ্গ হয়। বেদেও ঊষার বর্ণনা আছে, সে আর এক ভাবের সুন্দর। অথচ এই খনার বচনের মধ্যে যেমন ঊষা কতক