পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতি V8 শিল্প २२१ মান বজায় থাকা ক্রমেই তুষ্কর হয়। বর্তমান ধরে তবে বতে থাকে শিল্পকল, অতীতের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন নয় কিন্তু অতীতমুখীও নয় শিল্প। যে দিক দিয়েই চল আজকের জাতি ও তার মানুষগুলির সঙ্গে সেকালের যোগ স্বাভাবিক না হ’লে আজ আমাদের জাতীয় অনুষ্ঠানের সার্থকত। ভূত মামানোতে গিয়ে ঠেকে। রেলগাড়ী ষ্টেশন ছেড়ে বার না হ’য়ে ষ্টেশনের দিকে পিছোতেই যদি থাকে ক্রমান্বয়ে, তবে যাত্রীদের সে গাড়ী চড়ে গম্য কোথাও পৌছোনো মুস্কিল হয়। পুরোনো ঘরে নতুন বর-বধূ তার ইচ্ছামতে সেকালের কতক জিনিষ সংসারের কাযে লাগালে, কতক জিনিষ দিয়ে নিজেদের ড্রয়িং রুম সাজালে, এইভাবে যখন সেকালকে একালের সঙ্গে যুক্ত করা হ’ল তখন হ’ল নতুন কালের উপযোগী সেকাল। আবার যেখানে সেকালের সঞ্চয় ভাড়ার-ঘর থেকে সোজা পুরোনো পিতলের দোকানে চলে গেল কিংবা ভাড়ারেই রইলো এবং তার স্থানে বিদেশীয় দোকান ও হোটেল এসে ভর্তি করলে ঘরখানা, সেখানে নতুন পুরোনো ছয়ের মিলন একেবারেই হ’তে পেলে না। ’ বক্তৃতা দিয়ে প্রদর্শনী খুলে নানা উপায়ে সেকালের শিল্পকলার আদর বাড়ানো গেল আজকের জাতির কাছে ; এতে করে’ উত্তরাধিকার-সূত্রে জাতি এবং দেশ যদি কিছু পেয়ে থাকে তাকেই ধরে রাখা চল্পেী। প্রাচীন কীর্তি সংরক্ষণের আইন করে’ লাট কর্জন এ কায অনেকটা এগিয়ে দিয়েছেন–কিন্তু রক্ষণ ও বর্জন দুটো কথার অর্থে তো কিছু অর্জন করা বোঝায় না । আমাদের জাতি স্বভাবতঃ অতীতমুখী, এই বৃত্তি আমাদের কুলান্তগত প্রথা ধরবার দিকে চালাতে চাচ্ছে । এই বৃত্তি নিয়ে আমরা আজ যদি ছবি আঁকি মূর্তি গড়ি ঘর তুলি, তবে সব দিক দিয়ে আমাদের কাযের ধারা অতীতকে স্বীকার করে চলতে বাধ্য। শিল্পের কৌলীন্য রক্ষা করে চলতে চলতে আমরা পৌঁছেচি এমন অবস্থায় যখন আমাদের গান-বাজনা সমস্তই হয়ে গেছে আজকের নয়—আকবর ও তার পূর্বের আমলের। আমাদের সঙ্গীত ও শিল্প প্রাচীন কৌলীন্য বজায় রাখতে গিয়ে আজকের জীবনধারার সঙ্গে এক হ’য়ে মিলতে পারছে না, কাযেই সখের জিনিষ হ’য়ে রয়ে গেছে। ঠিক যে ভাবে অসংখ্য মানুষ যাদুঘরে ধর নানা ভারত-শিল্পের জিনিষগুলি দেখে বেড়ায় ও তার নানা রকম সমালোচনা