পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২২৮
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

করে, ঘোরাঘুরি করে যাদুঘরের ঘরে ঘরে, নাচ গান ইত্যাদিকেও ঠিক সেইভাবেই আমাদের অধিকাংশ লোকেই গ্রহণ করেছে তাদের জীবনে —গান শুনি, নিজে গাই না ; নাচ দেখি, নিজে নাচি না । নৃত্যকলা গীতকলা চিত্রকলা এ সবকে জাতীয় শিক্ষার মধ্যে স্থান দিতে বারংবার বলা সেই থেকে সুরু হয় যখন থেকে গাইতে গলা চায় না, নাচতে পা সরে না, আঁকতে লিখতে হাত 'চায়ই না। তখন সঙ্গীতসভাই করি, নাট্যমন্দির শিল্পশাল এ সবই বা খুলে বসি জাতিকে জাগাতে, দেখা যায় তাতে করে দেশে ও জাতির প্রাণে ষে সুর পৌঁছয়, ষে রঙ ধরে, তার ছন্দ ছাদ সমস্তই পুরাকালের গানের ট্রানটােন ভাবভঙ্গির ব্যর্থ অনুকরণ। তখন মনে আসে ষে পুরোপুরি অতীতমুখী শিক্ষা নিয়ে বতমান জাতিকে অতীতের আবছায়াবাজির তামাসা দেখাতে পার ছাড়া সত্যি কাযের লোক করে তোলা যায় না। দেবী বীণাপাণি কালে কালে নিজের হাতের বীণা একটির পর একটি র্তার বরপুত্রকে দিয়ে আসছেন, প্রত্যেক বার গুণী কবি তারা একটি একটি নতুন তার চড়িয়ে তবে বাজাচ্ছেন সেই বীণা—পুরোনো তারে পুরোনো বীণা ভাল বাজে না, নতুন তারে বাজে সে চমৎকার! সরস্বতীর বীণার তার প্রত্যেক বারে বদল হ’ল, বিচিত্র সুর দিয়ে চল্লো নতুন নতুন গুণীর হাতে । নারদের বীণায় নারদ ছাড়া কারে হাত পড়লো না, সেই পুরোনো তার, সুরও সেই সেকালেও যা ছিল একালেও তাই র’য়ে গেল । সেদিন আমার এক ছাত্র তার মামাতো প্রমাতামহের প্রপিতামহের আক একখানা ছবি নিয়ে এল, আমি কাযটা ছাত্রের হাতের বলে ভুল করে বসলেম, এতে আমার ছাত্র ভারি খুসি হয়ে উঠলে ; তার নামের আগে আমি ষে একটা চন্দ্রবিন্দু টেনে দিলেম সেটা সে দেখতেই পেলে না । এমনি আর একদিন আমার সামনে আর এক ছাত্র একখানি বিলাতি ছবি এনে বল্লে সেটা তার কায, আমি তার নামের অাগে শ্ৰীযুক্ত কথাটি উড়িয়ে দিয়ে ছোট করে বসিয়ে দিলেম মিষ্টার, এবং দু-একটা মিষ্টি কথা দিয়ে খুসি করে বিদায় করলেম। ঘরের ছেলে ঘরে গেল আনন্দে ।