পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতি ও শিল্প دهه zালে কালে তার বাইরের সঙ্গে ভিতরটাও বদলে চলেছে, এক কালের নরপিশাচ আর কালে হচ্ছে নরদেব ;–কাযেই দেখি সেকালের শিক্ষা তা একালে চালাতে পারা যায় না অটুটভাবে। জাতীয় শিক্ষার মধ্যে নানা শিল্পকলার স্থান আছে এটা এখন আর কেউ অস্বীকার করে না, যদিও জানি ষে তপস্তা সাধনা প্রতিভা এ সব না হ’লে কবিও হয় না শিল্পীও হয় না কেউ। কাষেই আমার দেশের চিত্র মূর্তি কবিতা গান নাচ নাটক খেলাধুলো ইত্যাদির যে কুলামুগত নানা প্রথা কালে কালে জমা হয়েছে এবং দেশাচারগত যে সমস্ত ব্যবস্থার ছাপ তাতে পড়েছে, সেগুলো দেখে’ শুনে হিসেব ঠিক করে তবে আজকের আমাদের জাতিকে শিক্ষার ব্যবস্থা করে নিতে হবে এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু একটা জায়গায় এসে সমস্ত ব্যাপারটা ঠেকে—সেটি হচ্ছে একাল। প্রাচীন জাতির কুলানুগত আচার ব্যবহার আজকের কালানুযায়ী হ’ল কি না সেইটেই দেখবার বিষয়। সেকালের অনুকরণে একালের ছেলেরা মেয়ের ছবি অঁাকলে পাঁচালী গাইলে চরকা কাটতে বসে গেল—এ হ’ল জাতীয় প্রদর্শনীতে মেডেল পাবার মতে করে শিক্ষা দেওয়া, একে জাতীয় শিক্ষা নাম দেওয়া যেতে পারে না, একজাতীয় এবং এককালীন শিক্ষা বল্পেও বলা যায়। কোনো জাত এবং কোনো জাতের কোনে কিছু এমন করে বড় হয় না। জাতীয় শিক্ষা সত্য হ’য়ে ওঠে তখনই যখন কালের সত্যকে সে মেনে চলে । যে জাত শিক্ষায় দীক্ষায় সেকালকেই মেনে চল্লো সে জাত কোনো দিন স-কালের মধ্যে জাগলে না—দেশজোড়া অ-কালের মধ্যেই তার যথাসর্বস্ব ক্ষয় হ’য়ে গেল । আগে গাছ বাড়লে তবে তো তার ফল-ফুল, তেমনি আগে জাত বাড়লে তবে তার শিল্পকলা ইত্যাদি কথা তর্কের মুখে বক্তৃতার জোরে প্রায়ই শুনি এবং হয়তো বলেও থাকবো ; কিন্তু হঠাৎ মনে পড়লো ষে, ফলন্ত ফুলস্ত বীজ বলে একটা পদার্থ আছে এবং সেই পদার্থটিই তাল তমাল বট অশ্বখ হ’য়ে বাড়ে। মালি না থাকলেও ফলন্ত বীজ গাছ হয়ে বাড়তে থাকে আপনার রস আপনি খুজে নিয়ে, কিন্তু অফলন্ত বীজ যদি হয় তবে সার-মাটিতেও নিস্ফলা রয়ে যায় সেটি । শিশু দাত নিয়েই জন্মায়, শুধু দাত ফোটে ছেলে একটু বড় হলে, জাতির মধ্যে তেমনি জাতিটার যে সব বিকাশ ভবিষ্যতে হবে তা ধরা