পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৩৪
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

পিঠে পুরোনো,ঘি মালিস করে দেখা গেল বেশ চলে ফিরে বেড়ানে লাগলে সে, তাই বলে পুরোণো ঘিয়ে লুচি ভেজে তাকে তুষ্ট ও পুষ্ট করা তে চল্লো না, ষে কবিরাজ পুরোনো ঘিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনিই তখন বল্লেন টাটক৷ গাওয়া ঘিয়ে লুচি ভাজতে। আজকের হাস তিনশো বছর আগেকার ডিম পাড়বার সাধনা করবার আয়োজন করে বসলে পরমহংস বলে তাকে ভুল করে না কেউ, তেমনি আজকের জাত কালকের ভূত নামাতে শব-সাধনার আয়োজন করছে দেখলে তার সিদ্ধিলাভের পক্ষে সন্দেহ অনেকখানি থেকে যায়। আজকের সঙ্গে কালকের নাড়ির সম্বন্ধ আছে । আজকের শিল্প কালকের শিল্পের উপরে বসে পদ্মাসনা শবাসনা—এটা সত্যি কথা, কিন্তু এই শবাসনার সাধনায় অনাচার ঘটলে ভূত প্রেত এসে সাধকের ঘাড় ভাঙে, সিদ্ধিদাত্রী বরদা আসেন না,—এটা জানা কথা । শবাসনাব জন্যে ব্যস্ত নই, শব খুজিছি কেবলি, এতে করে অতীতের ভূতের কবলে পড়ে কম পণ্ড হওয়া বিচিত্র নয়। সাধাসাধি করে হাতে পীয়ে ধরে লোককে দিয়ে কায হয়, মেরে ধরেও কার্য সিদ্ধি করিয়ে নেওয়া চলে, কিন্তু সে কায কার কায, সে সিদ্ধি কার সিদ্ধি ?—যে সাধছে বা যে মারছে কেবল তারি নয় কি ? আমার কথায় ভুলে বা ধমকানি শুনে যদি আজ দেশ শুদ্ধ ছবি মূর্তি গড়তে লেগে যায় আমি যেমনটি চাই তেমনি করে, তবে তার ফল দেশ পাবে, না, দেশের যারা আমার কথায় উঠলো বসলে তারা পাবে ? আমার খেয়ালমতো আমি লোক লাগিয়ে ঘর বাধলেম, সে ঘর আমার ঘর হ’ল, আমি তার আশ্রয় পেলেম, ছায়া পেলেম, মিস্ত্রী মজুর তারা ঢুকতেই পেলে ন বৈঠকখানায়। যে গুরু হাত ধরে নিয়ে গেলেন শিষ্যকে শিল্পজগতে তিনিই যথার্থ গুরু ; যে গুরু ঘাড় ধরে শিষ্যকে বল্লেন, “আমার আজ্ঞানুবত্তী হ’য়ে যেমন বলি তেমনি চল, সে গুরু গুরুমশাই, তিনি নিজের বেতন বাড়িয়ে গেলেন ছাত্রের দৌলতে।” আগেও ছিল এখনো আছে এক এক শ্রেণীর লোক জাতের কত হয়ে ওঠে তারা, যার জাত নেই তাকে জাত দিতে জানে না; মে জাত ঘুমোচ্ছে তাকে জাগাতে হ’লে কি করা উচিত তাও জানে না, জাত মারবার ফন্দিই তাদের মাথায় ঘোরে, পাশাঙ্কুশ-হস্তে তারা যমরাজের