পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৩৬
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

কালসূত্রে। এই জীবন-বিন্দু জাতীয় কোন রকম শিক্ষাগার হাসপাতাল ল্যাবোরেটারী লাইব্রেরী ইউনিভারসিটি কিম্বা সিটি ফাদারদের চা খাবার পেয়ালায় কিংবা আর্ট স্কুলের রঙের বাটির মধ্যে জন্মায়নি, মহাকাল একে সবার অসাক্ষাতে জন্ম দিয়েছে কোন এক লোকের বুকের ভাষায়, তারপর একদিন সেই একটি লোকের জীবন ও বিন্দু মহাকালই নিঃড়ে নিয়ে ধরেছে নিজের বিজয়মালার মধ্যে । ' এই যখন হ’ল তখন এল জাতি, বিচার করে ভেবে চিন্তে একটা মহাসভা ধূমধামে বসিয়ে সকলে জাতীয় কবি জাতীয় শিল্পী জাতীয় যে কেউ তার মূর্তি-প্রতিষ্ঠার জন্য চাদ তুলতে বার হ’ল এবং জাতীয় গৌরব অনুভব করার আয়োজন সার্থক করার চেষ্টায় কোথায় হ্যাশনাল কনসার্ট হ্যাশনাল থিয়েটার, ন্যাশনাল হোটেল আছে সেখানে বায়ন দিতে ছুটলো, ও কাযট। যাতে দ্যাশনাল রকমে হয় তার জন্তে একটা রেজোলিউসান পাস করিয়ে নিয়ে খেটেখুটে অকাতরে গিয়ে নিদ্রিত হ’ল নিজের কেল্লায়। মহাজাতি রাজকন্যা ঘুমিয়ে থাকে মহাকাল দৈত্যের মতো তাকে ধরতে এসে কেল্লার দরজায় ধাক্কা দিয়ে বলে, কে জাগে ? রাজকুমারী সাড়া শব্দ দেন না, সাড়া দেয় যে পাহারা দিচ্ছে মহাজাতির শিয়রে। কে জাগে ?—সওদাগরের পুত্র জাগে । কাল নিরস্ত হয় আবার আসে দ্বিতীয় প্রহরে, কে জাগে ?—মন্ত্রীপুত্র জাগে। তৃতীয় প্রহর যায়, কাল ফিরে এসে বলে, কে জাগে ?—কোটালের পুত্র জাগে। রাত-শেষে অন্ধকার পাতলা হয়, কাল ছুটে এসে বলে, কে জাগে ? কে জাগে ?— রাজপুত্র জাগে! বারে বারে এইভাবে মানবজাতি ঘুমোয়, জাতির শিয়রে জাগরণ বসে থাকে কালের কবল থেকে তাকে বাচাতে, সকাল হ’লে এদের কায শেষ হ’য়ে যায়। এদের রাতের গাথা অসমাপ্ত মালা রাজকুমারীর ঘরের দুয়োরে পড়ে থাকে, সে মালা মহাজাতি সাহাজাদীর হাতে গাথা মালা নয়, সে চাহার দরবেশ তাদের জপমালা। রাজকুমারী তাকে অনেক সময় মাড়িয়ে চলে যান নিজের গরবে, হয়তো বা রাজকুমারীর দাসী সে পেয়ে যায় সে মালা ঘর ঝাট দিতে, কিংবা ঘরের দুয়োরে আলপন টানতে বসে’ অথবা এমনি চলে যেতে যেতে । জাতির সঙ্গে শিল্পী কবি এদের যোগ জাগ্রতের সঙ্গে ঘুমন্তের