পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৩৮
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

আকাশ থেকে পাড়া চলে খানার টেবিলে ? একের প্রাণে যে বসন্তকালের সমীরণ বইলো তাই ধরে এ আসা-যাওয়া করলে কালে কালে দেশে দেশে বারে বারে, দেশের কবি গাইলে এই ডাক পার্থীর উদ্দেশে— “তুমি কোন পথে যে এলে পথিক দেখি নাই তোমারে, হঠাৎ স্বপন সম দেখা দিলে বনেরি কিনারে ।” —রবীন্দ্রনাথ লোকারণ্যের একধারে হঠাৎ আগমনী বেজে উঠলে, জাত জানেও না সোনার তরী এসে গেছে পসরা ব’য়ে নতুন অতিথিকে ব’য়ে, সমস্ত জাতির বিনা যেতনের চাকর কবি শিল্পী এরা ছুটে গেল অতিথির অভ্যর্থনা করতে, অতিথি তাদের ধন্ত করে গেল, জাত তার কোন খবরই নিলে না । বিদায় বেলায় দেশের কবিই এক তাকে বল্লেন— “তোমার সেই দেশেরি তরে আমার মন যে কেমন করে, তোমার মালার গন্ধে তারি আভাস আমার প্রাণে বিহরে ” অষ্ট্রেলিয়ার ঘোড়ার আড়গোড়ার একটা সাহেব সমুদ্রের উপরে সূর্যাস্তকে তাদের বিদেশী সন্ধ্যা বলে বর্ণন করেছিল আমার এক বন্ধুর কাছে ; সে হিসেবে আর্টকে বলা চলে ন্যাশনাল কিন্তু আসলে আর্ট তা নয়, সে পথিক, তার বাসা জাতীয় আগারে নয়, তার পথ জাত দেবতার রথচক্ৰ-লাঞ্ছিত বড় রাস্তাও নয়, ছোট গলিও নয়, ঠিক ঠিকান সব নিশান-হারানো পথে—বিস্ময়কর অপূর্ব-দর্শন। সে কবিকে বলায়— “কোন দেশে যে বাসা তোমার কে জানে ঠিকানা, কোন গানের সুরের পারে, তার পথের নাই নিশান৷ ” —রবীন্দ্রনাথ