পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৪৮
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

তলিয়ে গেছে তাও লিখি—সে হ’ল ছবি নয় ছাপ। রেখা মাত্রেই রূপবান, রেখা ছেড়ে ছবি কোথায় এবং রং ছেড়েই বা রেখা কোথায় ? এই রং আর রেখার যোগাযোগ ছবিকে সুনির্দিষ্ট অনির্দিষ্ট ভাবে ধরে চোখে । রূপের বাধন ছেড়া রঙ সেই শুধু অরূপের কতকটা আভাস দিতে পারে, যেমন আকাশের গভীর নীল, রঙ্গীন কাপড়ের নিথর রঙ ; কিন্তু তারা ছবি নয় ভাবের বাহন, রঙের একটা একটা ক্ষতি দিয়ে মনে এক এক ভাব ও রস জাগায় রূপের অপেক্ষ না রেখেই । সুর কতকটা যে কাজ করে, রঙ কতকটা সেই কাযষ্ট করে ; বসন্তবাহার স্বর আর বাসস্থা রঙের আলে। দুষ্ট-ই অনির্দিষ্ট রূপের ধ্যানে মগ্ন করে দেয় মুনকে, কিন্তু বাধা রঙ ও রূপের পাথারে মনকে তলিয়ে নিয়ে চলাই রেখার কায । ছবি যারা লেখে তারাষ্ট জানে রূপ রঙ ইত্যাদি দিয়ে সম্পূর্ণ ফুটতে দিলে এবং সম্পূর্ণ না ফুটিয়ে দিলে একই বস্তুর দুটো ছবি দুরকম রস দেয় দর্শককে । পটখানির মধ্যে তলিয়ে আছে যে রূপ, আর পট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে যে রূপ—দুটি দুরকম জিনিষ, কিন্তু দুটিই রূপের বাইরের জিনিয নয়, দুটিই রূপ, একের ঘোমটা আছে অন্তের ঘোমটা নেই এই তফাৎ। জগৎ-শিল্প এই তলিয়ে থাকা রূপ এবং ফুটে ওঠা রূপ —এই দুই তটের মধ্যে ধরা । সব দেশের সব শিল্পের ধারা ধরা গেছে এই দুষ্ট কিনারার মধ্যে । এই দুষ্ট পারের হিসেব নিয়ে কলা-রসিকদের মধ্যে দুটো দল স্বষ্টি হয়েছে Idealist ও Realist নামে, এবং ছোটখাটে। দঙ্গলও স্বষ্টি হচ্ছে যে কত তার ঠিকানা নেই, যথা, Futurist, cubist ইত্যাদি ইত্যাদি, দলে দলে দলপতিতে দলপতিতে ঝগড়ার ও সীমা নেই । Impressionist o' axoi ool Borg foss-natolibats; mystic কথা তাও ভারত শিল্পের পরিচয়-পুস্তকে স্থান পেয়েছে। ছবিকে নাতিস্ফুট না অতিক্ষুট, নির্দিষ্ট না অনির্দিষ্ট হ’তে হবে এই নিয়ে তর্কের সীমা ছাড়িয়ে উত্তর-প্রত্যুত্তর গালাগালির বন্যায় গিয়েও ঠেকবার জোগাড় হয়েছে। এই তর্কজাল কুয়াসার মতো যখন সরে যায় তখন দেখি পর্বতে পর্বতে শুধু ফুট অফুট দু'রকমের ছবি ঝরণা দিয়ে ব’য়ে আসছে দৃষ্টিপথে, এবং এও স্পষ্ট দেখি যে, যে খাত বেয়ে স্বভাবের দৃশ্যাবলী সেই খাত বেয়েই ভারত-শিল্পও চলেছে কি পুরাতন কি নূতন, অথচ সেটা হ’ল অস্বাভাবিক কারে কারে কাছে এবং এই অস্বাভাবিক শব্দটার কর্কশত৷