পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
আর্য ও অনার্য শিল্প
৩০৫

এদের স্থান হয়নি, জীবনব্রত-ক্রিয়ার মধ্যেও এদের আসন পড়েনি, মরার পরে এদের হাড় মাংস ভারতের মাটিকে খানিক রসিয়ে দিয়ে গেছে মাত্র। এই সমস্ত নিক্রিয় মানুষ ক্রিয়াবান অন্তব্রত এবং যাজ্ঞিক আর্যদের সঙ্গে এক সূত্রে বাধা এবং হয়তো আরণ্যক ঋষিদেরই পূর্বতন যুগের বর্বরাবস্থার কথা জানাচ্ছে । জন্মায় না মানুষ একেবারেই ঋষি হয়ে, আগে বর্বর তারপর অনেকগুলো অবস্থা অতিক্রম করে তবে তো আর্যাবস্থা। একই মানুষ যেমন জাগার আগে ঘুমিয়ে থাকে, অাজকের ক্রিয়াকমে পটু ছেলে একদিনের অকৰ্মণ্য শিশু অবস্থায় যেমন পড়ে’, আছে দেখছি, তেমনি এই সমস্ত অকৰ্ম। তারা যে কর্মঠ ব্রতক্রিয়াশীল অন্ত্যব্রত এবং আর্যদের একটা আদিম অবস্থার কথা জানায় না, তাই বা কে বলবে! ঘুমন্ত, অধজাগরিত এবং জাগ্রত এই তিন অবস্থ সম্পূর্ণ নিশ্চেষ্ট, অপেক্ষাকৃত ক্রিয়াশীল এবং পরিপূর্ণ ক্রিয়াবান—এই নিয়মে সব দেশের সব মানুষই উন্নতির পথে এগিয়েছে, ভারতবর্ষের আর্যগণের বেলাতেও যে এ নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি সেটা ধরে নিতে পারি। ছেলেটা অকৃতকর্মী, পড়লে না, শুনলে না, সংসার পাতলে না—আর এক ভাই সংসার পাতলে, অফিসে গেল, রোজগারী হ’ল, এবং আর এক ভাই সে প্রকাণ্ড চিন্তাশীল মহাপুরুষ ঋষি হ’য়ে বসলো। একটি পরিবারের মধ্যে সহোদরে সহোদরে এই পার্থক্য যখন স্বভাবের নিয়মে ঘটছে দেখি, তখন একই জাতির কেউ পেলে আর্য আখ্যা, কেউ পেলে অন্ত্যব্রত, কেউবা অকমণ দস্থ্য ইত্যাদি বদনাম —এতে আশ্চর্য হবার কি আছে । জীবতত্ত্ববিদ র্যারা তারা মানুষের জাতিবিভাগ করেছেন মুখাকৃতি ও দৈহিক মাপজোখ দিয়ে, তার কাউকে বলেছেন আর্য, কাউকে অনার্য । সেদিক দিয়ে প্রমাণ হচ্ছে যে আর্যজাতি এসে ভারতবর্ষে অনার্যদের মধ্যে বসতি করলেন এবং অনার্যদের ক্রমে সকল দিক দিয়ে জয় করে আর্যাবত" বলে প্রকাগু একটা রাজত্ব স্থাপন করলেন। এ ঘটনার অনুরূপ ঘটনা আজও ঘটছে দেখবো,—আজকের মিশনারি তারা এই ভাবে আফ্রিকা ফিজি প্রভূতি জায়গায় ধমবল এবং বাহুবল নিয়ে ক্রিয়া করে চলেছে অকমণ ও অন্তকমাদের মধ্যে ; শুধু এই নয়, অপেক্ষাকৃত সুসভ্য কিন্তু অন্তব্ৰত অথচ একই আর্যজাতি তাদের О. Р. 14-39