পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
আর্য ও অনার্য শিল্প
৩০৯

নিকৃষ্ট অবস্থা, উৎকৃষ্ট অবস্থা, আর্য অবস্থা, অনার্য অবস্থা এ বল্লে কোন গোল নেই । ছোটয় ভাষা নেই, বড়য় ভাব আছে ছোটয় ঢেল৷ খেলা, বড়য় পাথরের মূর্তিকে কেটে লীলা, ছোটয় চলি চলি পা পা, বড়য় নটরাজের লাস্ত ও তাণ্ডব, ছোটয় মা মা, বড়য় সারি গা মা—এই দাড়ায় ব্যাপারটা। গাছের শিকড় মাটি থেকে জল টানে, ডাল সেই রসে বাড়ে, পাতা গজায়, ফল ফলায়, ফুল ফোটায় —এমনি ঘনিষ্ঠত আর্যে অনার্যে। কেবলি আর্যগণের সম্বন্ধে নয়, আর্যেতর র্যারা তাদেরও সঙ্গে আর্যগণ কিরূপ সম্বন্ধে বদ্ধ তারও সাক্ষ্য দিচ্ছে চতুৰ্বেদ। আর্য-শিল্প সাক্ষ্য দিচ্ছে আর্ঘেতর অরস্থার শিল্পের, আর্যচিন্তার প্রবাহ বহন করছে আর্যেতর অবস্থার চিন্তার ধারা। বেদ যদি আর্য বলে’ একটি মাত্র দলের হ’ত তো একটা বেদই হ’ত, চারখানা মিলে একটা হ’ত না। যেমন চতুৰ্বেদ, তেমনি চারিদিকের সভ্যতা শিল্পকলা এ সব নিয়ে এক আর্য-শিল্প । অতীতকালে আর্ঘেতর অবস্থাকে অস্বীকার করা অসম্ভব ছিল আর্যদের পক্ষে, কেননা তারা সেই মানব সভ্যতার উৎকর্ষের প্রাতঃসন্ধ্যায় বত মান ছিলেন যখন নতুন আলোয় পূর্ব রাত্রির অন্ধকারকে জড়িয়ে রয়েছে, দিনের গায়ে জড়িয়ে রয়েছে রাতের কৃষ্ণসার মৃগচর্ম। সব দিক দিয়ে—ভাষায় শিল্পে গীতে নাট্যে সাহিত্যে—তপস্যার সূত্রপাত হচ্ছে তখন, মানবাত্মা নিস্ক্রান্ত হচ্ছে প্রজাপতির মত অজ্ঞতার আবরণ কেটে। এই সন্ধিক্ষণে যখন আর্যেরা তাদের অনার্য অবস্থা সম্পূর্ণ কাটিয়ে উঠতে পারেননি সেই সময়ে আলোর সঙ্গে অন্ধকারকে, নিজেদের বতর্মান অবস্থার সঙ্গে অতীতকেও স্বীকার করতে বাধ্য র্তাদের সমস্ত শিল্পরচনা। উষা দেবীর মূর্তি পাথরে বা কাঠে তারা কেমনতরো করে কেটেছিলেন তার উদ্দেশ এখন তো পাওয়া যাবে না, মূর্তিশিল্প নিশ্চয়ই খুব বেশি দূর এগোয়নি তখন আজকের আফ্রিকানদের শালভঞ্জিকার চেয়ে, কিন্তু ভাষা দিয়ে যে মূর্তি র্তারা উষাদেবীকে দিলেন তা আলো-অন্ধকারের ছন্দে তাদের অতীত এবং বর্তমানকে চমৎকার রূপ দিয়ে ধরলে আমাদের কাছে। “কৃষ্ণবর্ণ অন্ধকার হইতে পূজনীয়, বিচিত্র গতিমতী ও মনুষ্য আবাসের রোগনাশিনী উষা উদয় হইলেন, বিচিত্র রূপবতী অহোরাত্র দেবতাদ্বয় ব্যবধানরহিতভাবে চলিতেছেন। একজন গমন করেন আর