পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩২২
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

অদৃশু গোপনতার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে, আর এক মুখ তার আর্য অবস্থার অপার বিস্তারের মধ্যে নিমগ্ন হয়েছে। সমুদ্রের একটা বিন্দু জল থেকে সমুদ্রের বিরাট প্রসার কিছুই ধরা যায় না, সমুদ্রের জল নীল ও নোন, মিঠা নয়, এটা এক ফোট থেকেও বোঝা যায়—কিন্তু সমুদ্র কি ব্যাপার তার একটুও ধারণা হয় না একটি ফোট দিয়ে। তেমনি মৌর্য বংশাবলীর এতটুকু পাত্রে কি গুপ্ত রাজ্যের আমলে ধরে দেখলেম ভারত অভারত ব্যাপী বিরাট আর্য-শিল্পকে । এ যেন ঐরাবতকে দেখা সেই ভাবে হ'ল যে ভাবে একদল অন্ধকারে কেউ ঐরাবতের পা, কেউ শুড়, কেউ লেজ, কেউ কান ছুয়ে ছুঁয়ে বল্লে—এর সপের আকৃতি, এর সূপের আকৃতি । বঙ্গোপসাগরের তীরে মরুভূমির মাঝে কোণার্কের সূর্যরথ এবং বোম্বাই অঞ্চলের একটা সম্পূর্ণ পর্বতকে এক টুকরো পাথরের মতো কেটে কৈলাসপতির কৈলাস, এই দুই সীমানাতে আর্য-শিল্পের চলাচল বদ্ধ হল, তারপর এসে পৌঁছলে৷ বাইরের একটা নতুন ধারা। এখন সহজেই মনে হয় আর্য-শিল্পের শেষ করি অস্তমিত সূর্যের রথের এবং শূন্ত কৈলাসের কাছে। ওদিকে মরুভূমি এদিকে পর্বতকন্দর—এ শুধু একটা অধ্যায় শেষ হ’ল শিল্পের ইতিহাসে । মোগল আমলে আর্যশিল্পই আবার নতুন রূপস্থষ্টির সূত্র ধরলে কিন্তু সেই পুরাতন ভারতীয় ভাব বইতে থাকলে মোগল শিল্পের অন্তরে অন্তরে । দেবতা নয় এবারে নরদেব—‘দিল্লীশ্বরে বা জগদীশ্বরে ব|”—র্তার পুরী নির্মাণের জন্তে ডাক পড়লো শিল্পীর, মন্দির নয় কিন্তু সমাধিমন্দির। সেই বৌদ্ধ যুগের রামায়ণের যুগের কুরুপাণ্ডবের যুগের স্বপ্ন নতুন করে নতুন আকারে ধরা পড়ে গেল শ্বেত পাথরে রক্ত পাথরে নীল যমুনার ধারে ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বরের নতুনতরো ত্রিমূর্তি যার অপূর্ব সৌন্দর্য ও কলা-কৌশলের কাছে জগতের শিল্পরসিক তারা আর্য অনার্য নির্বিশেষে সসন্ত্রমে কুর্নিশ দিচ্ছে প্রণাম দিচ্ছে আজ। - কলকাতার কাছেই দুটো তিনটে কবরস্থান রয়েছে, সেখানে অনেকগুলো নানা আকারের কবর অাছে কিন্তু সেগুলো কবর মাত্ৰ— কাগজ চাপা ঢেলা যে ভাবে থাকে সেই ভাবে মৃতদেহগুলোকে চেপে রয়েছে পাথর আর ইট। কবরগুলো কারে কিংবা কিছুর প্রতিম দেয় না, বলে