পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর্যশিল্পের ক্রম ৩২৩ মাত্র—আমি কবর, রূপকে আচ্ছাদন করেছি, রূপকে ফোটাতে আমি নেই। কিন্তু ঐ তাজবিবির কবর কত কবি কত যাত্রী তাকে দেখে মুগ্ধ হ’ল ও বল্পে—এ কি সুন্দরী ! এ কি সুন্দরী । এই বিচিত্ররূপে নান লোকের কাছে দেখা দিচ্ছে অথচ একটি সে । বহুযুগের সন্ধানে ভারতবাসী শিল্পীরা পেয়ে গেল এই সত্য, ভুলবে কেমন করে’ ? তাজমহলের পাথরের রক্ত শ্বেত এবং নদী ও আকাশের নীল এক করে আর্টিষ্ট গোরস্থানের একটা সামান্য কবর গড়ে গেল বল্পে ভুল বলা হয়—অনেক বর্ণের পাথরের ত্রিমূর্তি নতুন ছাদে গড়, শিল্প-শাস্ত্রের বাধা নিয়মে গড় নয় কিন্তু রসের আপিন নিয়মে গড়া একটি প্রতিমা বলতে পারি একে । ইউরোপের শিল্পী তারা ভারতবাসী শিল্পীদের মতোই এক যুগে সুবিধা পেলে প্রতিমা গড়ে তোলবার, তাদের ধম তাদের ডাক দিলে যিশুর প্রতিম গড়ে দিতে। প্রতিমার মধ্য দিয়ে বুদ্ধকে যে ভাবে সবার করে দিয়ে গেল ভারতবাসী শিল্পীরা, কই তেমন ভাবে ওরা তো গড়তে পারলে না, নিস্ফল রইলো ওদের চেষ্টা যিশুর প্রতিমার বেলায় । রাজাদের প্রতিমা তাও গড়তে পূর্ব পশ্চিম দুই ভাগ পৃথিবীর যে কেউ শিল্পী তাদের ডাক পড়লো—ভারতবাসী রাম রাজা রাবণ রাজা দেবরাজ থেকে আরম্ভ করে রাজরাজেন্দ্র সবই লিখনে রাজদেহের সাদৃশু দিলে অথচ ঠিক রাজাটি নয়, রাজশ্রীর প্রতিমা একটি একটি –এই দিলে ভারতশিল্পী । কিন্তু সেই রোমক আমল থেকে এ পর্যস্ত সমস্ত ইউরোপের রাজাদের ছবি দেখি—সেখানে এ রাজা সে রাজা কেউ বুড়ে কেউ যুব সুন্দর সবাই স্থবেশ সবাই, কিন্তু যে ভাবে ঔরঙ্গজেবকে পাই, সাজাহানকে পাই, জাহাঙ্গীরকে পাই একটা একটা রসমূর্তিতে—সে ভাবে পাই না তে ওদের রাজাদের। রসের প্রকাশ এই_বিশ্বসংসার এটা_ভারতের_আর্য-শিল্পের কথা ; ও-দেশের_কথা স্বতন্ত্র রূপের জয় দৃষ্টরূপের মানসরূপের নয়। ইউরোপের শিল্পী এবং ভারতের শিল্পী, একের কাছে অপরে অন্তব্রত বলে’ পরিচিত হচ্ছে শিল্পের দিক দিয়ে এখনো । এমন একদিন আসবেই যখন এই দুই অন্যত্রত এক হবে, যে ভাবে এক হয়েছিল আর্যে অনার্যে বহুযুগ পূর্বে এই ভারতবর্ষে। এই যে দুই ভিন্নপন্থী এক হ’তে চল্লো এর লক্ষণ আমাদের ঘরবাড়িতে আমাদের বেশভূষায় চারিদিক থেকে