দৃষ্টি ও সৃষ্টি
“Those organs which guide an animal are under man’s guidance and control.”
লক্ষ্য করবার জন্যেই হল চোখ, শব্দ ধরবার জন্যেই হল কান, হাত পা রসনা সব কটাই হল রূপ রস শব্দ স্পর্শ গন্ধ ধরে’ বিশ্বের চারিদিককে বুঝে নেবার জন্যে। সজীব সব মানুষেরই বুদ্ধির চারিদিকে ইন্দ্রিয় সকল নানা শক্তিশেল নিয়ে খবরদারি কাযে দিনরাত ব্যস্ত রইলো, এই হল স্বাভাবিক ব্যাপার; অথচ অর্জুনের লক্ষ্যভেদ, কিম্বা দশরথের শব্দভেদ এমনি নানা রকম ভেদবিদ্যার কৌশল শিক্রে পাখী থেকে আরম্ভ করে শিকারী মানুষে যখন লাভ করলো, দেখলাম তখন সেই জীব অথবা মানুষ নিজের চোখ কান হাত পা ইত্যাদিকে অস্বাভাবিক রকমে অসাধারণ শক্তিমান করে তুল্লে;—এই কথাই বলতে হয় আমাদের। ছেলেকে অক্ষর চিনতে শেখালে, বই পড়তে শেখালে তবে সে আস্তে আস্তে চোখে দেখতে পায় কি লেখা আছে, বুঝতে পারে পড়াগুলো, এবং ক্রমে নিজেই রচনা করার শক্তি পায় একদিন হয়তো-বা। যে মানুষ কেবল অক্ষর পরিচয় করে চল্লো, আর যে অক্ষরগুলোর মধ্যে মানে দেখতে লাগল, আবার যে রচনার নির্মাণ-কৌশল ও রস পর্যন্ত ধরতে লাগলো এদের তিন জনের দেখা শোনার মধ্যে অনেকখানি করে পার্থক্য যে আছে তা কে না বলবে! কাযেই দেখি—শিল্পই বল আর যাই বল কোন কিছুতে কুশল হয় না চোক হাত কান ইত্যাদি, যতক্ষণ এদের স্বাভাবিক কার্যকরী চেষ্টাকে নতুন করে সুশিক্ষিত করে তোলা না যায় বিশেষ বিশেষ দিকে—বিশেষ বিশেষ উপায় আর শিক্ষার রাস্তা ধরে। এই শিক্ষার তারতম্য নিয়ে আমাদের সচরাচর মোটামুটি দর্শন স্পর্শন শ্রবণ ইত্যাদির সঙ্গে শিল্পীর ও গুণীর দেখাশোনার পার্থক্য ঘটে। ছবি কবিতা সুর-সার প্রভৃতি অনেক সময়ে যে আমাদের কাছে হেঁয়ালীর মতো ঠেকে তা দুই দলের মধ্যে এই পরখ ও পরশের পার্থক্য বশতঃই