পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩২৬
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

নিয়ে সুন্দর ফুটলো রূপটি বর্ণপ্রধান ও বাকা । সমুদ্রতীরে রূপের ভেদাভেদ শব্দ ধরে ফুটলো আর স্থিতি ও গতি ধরে ফুটলো ঠিক সঙ্গীতের মতোই আকাশ–নিস্তব্ধ নিথর নীল এবং সমুদ্র-সচল সশব্দ নীল । সূর্যের কিরণচ্ছটায় বাকায় সোজায় মিলিত রূপ, গাড়ির চাকায় বাকার কোলে সোজা । ঢেউয়ের পরে ঢেউ সেখানে বঁাকায় বাকায় মিলন, সারি সারি তালগাছে বৃষ্টিধারা পড়ছে অবিশ্রান্ত—সোজায় সোজায় মিল । রূপের ঘেরে বন্দী_আমরা গোড়া থেকেই, এই বাধন থেকে মুক্তি হচ্ছে রূপমুক্তির সাধন রূপকারের। , - _যেরূপ সমস্ত নিয়ে রূপকারের কারবার তারা বাধা রূপ, আর্টিষ্ট তাদের মুক্তি দিলে তবেই তারা পথ পেলে মন থেকে মনে চলাচলি করবার। রূপ-সাগরের তলায় সুপ্তি দিয়ে বন্ধ করা রূপকথার রাজকন্যা, রূপ-মুক্তির সাধন হ’ল তাকে জাগিয়ে আনা । রেখা মুক্তি_পেলে_তো রঙ ধরে বাধা রূপের প্রাচীর টপকে সে_ভবিরাজত্বে পালালো বন্দী। কথা থাকে অর্থ দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা, কবি তাকে মুক্তি দেন তবে জানায় সে বেদন গুঞ্জন করে ভ্রমরের মতো হৃদয়পদ্মের পাপড়ি খোলাতে, তখন আর শুধু থাকে না কথা আর তার অভিধান দোরস্ত মানেটা । যেমন এই বাচ্ছা কথাটিতে সে সর্বজীবে সর্বকালেই বাচ্ছা এইটেই বুঝায়, কিন্তু এই বাচ্ছারূপী কথাটি মুক্তি পেলে যেমনি বলা হ’ল বাছা বাছনি । যেমন জুতো সে মুক্তি পেলে বাধা রূপ থেকে জুতুয়াতে, পাট—পট—পট একই কথা কিন্তু রূপ দেখায় স্বতন্ত্র, তেমনি অসংখ্য কথা ছাড়া পেয়ে গেছে ও যাচ্ছে কবির হাতে বদ্ধ রূপের শিকল কাটা পাখী সমস্ত । সঙ্গীতে স্বরমালা সাত রাজার ধন সাতটি মাত্র, কিন্তু সাতাশ লক্ষেরও বেশি রূপ পেয়ে ঝলক দেয় সাত স্বর—গুণীর কণ্ঠে অপূর্ব সাতনর হার । উৎসঙ্গে লীনা বীণা সে মুক্তস্বরা, তাকে পরিত্যাগ করে’ নিগুণ যখন চলেন একটা বাক্সে বাধা সারগমের অচল ঠাটের মধ্যে গলাটা বলিদান দিয়ে গান গাইতে, তখন রাগ রূপ সমস্ত তারা মুক্তির স্পর্শ পায় না কিন্তু ছাদ পায় বাক্সের ও সিন্দুকের, তেমনি এই_য়্যানাটমির কিংবা ফটেtযন্ত্রের বাক্সের মধ্যে হাতের টান ও মনের পরশ মিলিয়ে টানার কথা—সে_সব রঙ রেখা তাদের যখন ঢালাই হ’তে দেখি তখন্ত