পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপ |రిరి) বড় বড় কবি ও রূপদক্ষ নট ও পট-রচয়িত তাদের কথা ছেড়ে দিই, যে লোকটা ছেলে খেলানোর পুতুল গড়ছে—বাঘ ভালুক সাহেব মেম পশুপক্ষী হাড়িকুড়ি কত কি—সেই যে পুতুলওয়াল সে তো যথেচ্ছ গড়ছে না, ছেলে ভোলে কিসে এ তার স্মরণে রয়েছে অথচ তাকে নতুন নতুন রূপ দিতে হচ্ছে নিজের মতে । ছেলের একটি ফোট৷ প্রাণ কিন্তু বিশ্বরূপকে নিয়ে খেলার ইচ্ছা তার,—সে হাতী চায়, ঘোড়া চায়, পাখী চায়, বাঘকে চায়, শেয়ালকে চায় খেলার সার্থীরূপে পেতে, কিন্তু সত্যি জানোয়ার দেখে সে ডরায়, ভারি খেলনা হ’লে তুলতে ও টানতে হয় শিশুর প্রাণান্ত, কাচের পুতুল নিয়ে খেলতে গেলে সে হাত পা কেটে বসে, এক খেলনা নিয়ে বেশিক্ষণও সে ভুলে থাকে না—নতুনের প্রেমে পাগল তার নতুন জীবন, সবই তার বিস্ময় জাগায়। রূপ মান প্রমাণ ভাব ভঙ্গি সাদৃশ্য বর্ণ লাবণ্য কোনো দিক দিয়ে অনুকৃতির নিয়মকে মান চলে না এখানে রূপদক্ষ খেলনাওয়ালার । বাঘ ঠিক বাঘ হ’লে চল্লেী না, এমন একটি রূপ দিতে হ’ল পুতুলকে যা বল্লে—আমি বাঘ বটে কিন্তু খেলাতে এসে যোগ দিতে পারবো এমন বাঘ আমি। লঘুভার চমৎকার বাঘ যাকে দেখতে বাহার, খেলতে মজা যার সঙ্গে,—এই হ’ল তো ছেলে ভুল্লেী, নচেৎ নয়। আইনও হ’ল এই সব ক্ষণভঙ্গুর পদার্থ দিয়ে খেলনা প্রস্তুতের। মূর্তি-শিল্পের চরম হ’ল যেখানে পাষাণে দেবতার আবির্ভাব হ'ল। এই সব আর এক প্রস্থ বুড়ে বয়সের খেলনা । পুতুল গড়ার নিয়ম সেখানেও খাটলো অনেকখানি, তফাৎ শুধু হ’ল মাপের দৈর্ঘ্যে প্রস্থে কোথাও কোথাও । ছেলের খেলনা হালকা, বুড়োর খেলনা ভারি, এটা ছোট মাপ, ওটা নবতাল দশতাল এমনি তাল তাল রূপ—এই যা তফাৎ। বালির স্তৃপ গড়লে ছেলেতে আর পাথরের স্তৃপ গড়লে বৌদ্ধ রাজ–সাজের বাহুল্য এবং রূপের সমাবেশ ইত্যাদি নিয়ে আরো অনেকখানি পরিপূর্ণ হ’ল বৌদ্ধ স্তৃপ কিন্তু রূপটা রইলো সেই ছেলের গড় বালির স্তুপেরই। প্রতিকৃতি অনুকৃতি এ সবের স্থান আছে রূপবিদ্যার মধ্যে, এদের জন্য স্বতন্ত্র নিয়ম আছে—তারা হ’ল রূপকে শত শত বার পুনরাবৃত্তির নিয়ম। রূপদক্ষের সৃষ্টি ষার পুনরাবৃত্তি নেই তার নিয়ম সমস্ত স্বতন্ত্র