পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপের মান ও পরিমাণ VOG O সম্বন্ধে যথেচ্ছাচার করা যে চল্লো তা নয়। শাস্ত্রের মতানুষায়ী মান পরিমাণ ধরে চলতে না চাই তো প্রকৃতিগত স্বাভাবিক মান পরিমাণ এবং নিজের মনোগত মান পরিমাণ ধরে চলতেই হ’ল । পরিমাণকে অতিক্রম করে যদি একটা মনুমেণ্ট খাড়া করি বস্তুর ভার ও ডোলের সামঞ্জস্য রক্ষা না করে’—তবে পরিশ্রম ব্যর্থ হয় এবং কীর্তিস্তম্ভটি উঠতে উঠতে ভেঙে পড়ে আপনার ভারে আপনি । প্রমাণকে নু মেনে ক্রোশব্যাপী একখানা ছাদ চারখানা দেওয়ালে চাপানে চল্লোই না, প্রথমেই ঠেকলে কড়ি বরগার মাপে জোখে—যত বড় ছাদ তত বড় কড়ির জন্য কাঠ পাওয়া দুষ্কর হ’ল, ছাদের ভরাণ দিতে মাপে কুলোয় না কাঠ বঁাশ কোনোটা,—এইভাবে স্বভাবের কাছ থেকে নানা বাধা ; তারপর ছাদটার কাছ থেকেই বাধা এল, ছাদ বলতে থাকলো—আরো চারশোখানা এত খাড়াই এত মোট দেওয়ালের ঠেকে দাও নচেৎ রক্ষে নেই। শাস্ত্রমতে না গড়লেও বস্তুগত সহজ মান পরিমাণ ছেড়ে গড় সম্ভব হ’ল না । যে রেখা দিয়ে ছবিতে রূপ বাধি তার ঘথেচ্ছ ব্যবহার করা চল্লো না। বাক৷ সোজা সরু মোটা রেখা সমস্ত তাদের কোনটা এর সঙ্গে মেলে কোনটা ওর সঙ্গে মেলে না, কেউ জানায় সে ভারি, কেউ জানায় সে হাল্কা, এদের নিয়ে প্রমাণসই ভাবে সাজালেম তবেই তে৷ হ’ল গড় রূপটি পাকা, না হ’লে হ’ল হিজিবিজি ব্যাপার। রেখা সমস্তের সামঞ্জস্য এই মান পরিমাণের দ্বারা সুনির্দিষ্ট হয় তবে ফোটে রূপটি পরিষ্কার। এই সব অলিখিত মান পরিমাণ যদি না থাকে আৰ্টিষ্টের কাছে তবে ভুল হয় তার প্রতি পদে । আমাদের উপর প্রায়ই হুকুম হয় ক্রেতার দিক থেকে—মুখটা একটু হাসি হাসি কর । এই যে হাসির পরিমাণ সে হাসা ঘোড়ার হাসি থেকে মুচকি হাসি চাপা হাসি পর্যন্ত রয়েছে। কি পরিমাণ হাসি কোন ডেলের মুখে মানাবে তা না ভেবে যদি কায সুরু করি তো হয়তো ঘোড়ার হাসি দিয়ে বসলেম নদীয়ার গোরার মুখে ! হাসির ধ্যান হ’ল ওষ্ঠের বিস্তার ও দন্তের বিকাশ, কিন্তু কি পরিমাণ ওষ্ঠের বিস্তার ও কতখানি দন্তের বিকাশ দরকার এ যার মান পরিমাণ ও সোসামঞ্জস্য জ্ঞান আছে কেবল তাকে দিয়েই হয়। কিমাকৃতি যখন দিচ্ছি রূপে তখন বসাচ্ছি মানুষের মুখে ঘোড়ার O. P. 14-45