পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপের মান ও পরিমাণ C6 6. প্রভাবের নিয়মে একটা ছোট মাপ পেলে—অষ্টতাল সপ্ততাল নবতালের মাঝামাঝি একটা মাপ—একে অতিক্রম কর। মানে অস্বাভাবিক করা। একট পাহাড় প্রমাণ পাথরেই গড়ি বা এগারে ইঞ্চি ইটেতেই গড়ি, মানুষের স্বাভাবিক তালটি বজায় না রাখলে বেতাল মানুষ করা হ'ল। এই তাল বেতালকে মানিয়ে গড়তে পারলে যে সেই হ’ল রসিক ও আর্টিষ্ট এবং এই জন্তই রসরূপটিকে বলা হ'ল নিয়তিকৃত নিয়মরহিত হলাদময় ইত্যাদি। . স্বভাবের নিয়ম সেখানে নিয়মে এক পক্ষে বাধা এক পক্ষে ছাড়া সব রূপই ; একটি গাছ বৃক্ষরূপের কঠোর নিয়মে বাধা কিন্তু স্বয়ংরূপের দিক দিয়ে সে সম্পূর্ণ ছাড়া দৈর্ঘ্যে প্রস্থে বাড়তে কমতে। মানবরূপ সেও এক হিসেবে বাধা কিন্তু অন্য হিসেবে প্রত্যেক মানুষ স্বতন্ত্ররূপ। শাস্ত্রের নিয়ম সে নিয়তির চেয়েও কঠোর নিয়ম, তার চারিদিক এমুখ ওমুখ সেমূখ করে বাধা—ধ্যান লক্ষণ মুদ্র মান পরিমাণ সব দিয়ে ; না হ’লে পুরুত ঠাকুরের কায চলে না, লক্ষ্মীতে আর গৃহলক্ষ্মীতে সব দিক দিয়ে স্বতন্ত্র করে' রাখা ছাড়া উপায় নেই। পুতুলওয়ালা যে খেলনা গড়েছে সে না মানলে নিয়তি, ন মানলে শাস্ত্র, অথচ অদ্ভুত কৌশলে সে রূপ সমস্ত দিয়ে চল্লো। রসের অনির্বচনীয়তাকে স্বীকার করে’ রূপ পেলে পুতুলওয়ালার হাতের পুতুল । রূপ দেবার দক্ষতা হিসেবে দেখতে গেলে পুতুলওয়ালাকে তারিফ দিতেই হয়, কেননা তার স্বষ্টিতে অপরিমেয়ত গুণটি পরিপূর্ণরূপে বিদ্যমান। এক আত্মা থেকে আর একটি আত্মার রস পৌছে দেওয়া শাস্ত্রমান ধরে চল্লো না। আমাদের কাছে যা দেবতা সাহেবদের কাছে তা দৈত্য হ’য়ে রইলো, স্বাভাবিক মান পরিমাণ ধরেও এ কায চল্লো না,—আমার কাছে যার চেহারা ঠেকলো রূপে লক্ষ্মী তুমি তাকে বল্পে লক্ষ্মীপেচাটি! আমার মানুষ—তোমার ঘরে তার মমর মূর্তির স্থান দিতে ব্যস্ত হও না কেউ, কিন্তু পুতুলের যেলা স্বতন্ত্র কথা। মেলার পুতুল সোনার খেলনা সর্বদেশে সব ঘরেই তার স্থান হ’ল—বিক্রমাদিত্যের বত্রিশ-সিংহাসনে পুতুল,ঃখেলাঘরের কুলুঙ্গীতে পুতুল, হাটে পুতুল, বাটে পুতুল—যেখানে রাখ তাকে সব জায়গাতেই তার আদর অাছে দেখবে। পুত্তলিকা-শিল্প— শিল্পের মূল সেখানে রসের মধ্যে শিকড় গাড়লে ; প্রতিমা-শিল্প—ধর্মের