পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপ \ర్సిున বাদ দিয়ে কাজ হয়ই না । খেতাবে রাজা মহারাজা—সত্যিও হয়তো বা একটা রাজ্যেশ্বর, কিন্তু তার স্বাভাবিক ভাবখানা সাধারণ রকম, সুতরাং রাজা বলে তাকে চালানোই চল্লো না খালি ফটো দিয়ে, কাযেই তার ডৌল মান পরিমাণ ভাব ভঙ্গি সব ফেরালেম তবে পেলেম রাজরূপটি রাজভাবটি । কথাই আছে—“কামালে জোমালে বর আর নিকোলে জুকোলে ঘর ” .ডৌল ও সাজ ফেরানোর সঙ্গে ভাবৈর হেরফের ঘটে ছবিতে মূর্তিতে এটা জানা কথা । শুধু সাজ ফিরিয়ে ফিরিয়ে আমাদের অনেকগুলি দেবতার রচনা হয়েছে-–ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর দেবদেবী, কেবল মুদ্রা অার সাজের পার্থক্য নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন রকম হ’ল। আবার ডোলের ভিন্নত নিয়েও অনেক মূর্তি রয়েছে, যেমন—গণেশ কৃষ্ণ নটরাজ বুদ্ধ ইত্যাদি সমভঙ্গ ত্রিভঙ্গ অতিভঙ্গ মূর্তি সব। বিষ্ণুমূর্তি আর সূর্যমূর্তি দুয়ের ভিন্নতা ভাব দিয়ে হ’ল না কিন্তু সাজসজ্জার একটু আধটু অদল-বদল নিয়ে হ’ল, আবার গণেশ আর বংশীধারী কিংবা নটরাজ ও বৃদ্ধ সবাই আলাদা আলাদা ভোল নিয়ে পৃথক পৃথক ভাবে দেখা দিলে। এখন দেখি যে কোন কিছুর ভাবটি নানা উপাদান নানা উপায় ধরে প্রকাশ করা চল্লো । একটা ঝরণার ভাব কোন আর্টিষ্ট ফোটায় সেটি ঝরণা পাহাড় আকাশ ইত্যাদি নানা সামগ্ৰী জুড়ে একটা ছবি করে, আবার কোন আর্টিষ্ট শুধু মস্ত পটখানায় গোটাকতক জলের ধারা মাত্র টেনে বুঝিয়ে দিলে ভাবখানা। কিন্তু দুই আর্টিষ্টের কেউ ঝরণাকে বাদ দিয়ে কিছু করলে না ; শুধু একজন ঝরণার সঙ্গে তার আশ পাশকে জুড়ে দেখালে, অন্য জন জলধারাটুকু মাত্র পৃথক করে নিয়ে ধরলে পটে—ঝরণা বাদ গেল না কোন ছবিতেই । এইবার যাকে নিয়ে কথা—যার রূপ ও ভাব ফোটানে—তার নিজ মূর্তিটা বাদ দিয়ে স্বতন্ত্র উপাদান দিয়ে তাকেই প্রকাশ কেমন করে’ হয় দেখ । একটি সন্ধ্যার ভাব দুখান মাণিক আর একটি পিছম দিয়ে ফুটলো, যথা— “সায়মণির কোলে রতন মণি দোলে দুর্গাপিদিম বলে ।” শুধু কবিতাতেই যে এইভাবে তাকে ফোটানো চল্লো তা নয়। О. Р. 14—47