পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৭৬
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

অথচ গম্ভীরভাবে সমালোচক বসে যায় চিত্র-সমালোচনায়, যথা—“হরপার্বতী” তিন বর্ণের, শিল্পী (অমুক)—নিতান্ত কচি ; “মুসাফির” তিন বর্ণের, শিল্পী (অমুক)—ভাল ; “বিরহী যক্ষ” তিন বর্ণের, শিল্পী (অমুক)— বেচার যক্ষের অবস্থা শোচনীয় ; “পদ্মাবতী” তিনবর্ণের, শিল্পী (অমুক)— গোড়াতেই রঞ্জনের অভাব, প্রস্ফুটিত না হইলেই ভাল হইত ; “ওমার খৈয়ামের ছবি” শিল্পী (অমুক ),—পণ্ডশ্রম ; “আড়িপাত।” তিনবর্ণের, শিল্পী ( অমুক )—তুলি ছাড়িয়া পেন্সিল ধরা আবশুক ; ইত্যাদি ইত্যাদি। তিন বর্ণের রঙের টিনগুলোর উপরে বসে’ মাছি যদি চিত্র-সমালোচনা করতে চলে তবে সে চিত্রের লাবণ্য বাদ দিয়ে রূপ বাদ দিয়ে রঙ বাদ দিয়েই বকে চলে যা তা নিশ্চয়ই । চটকানো পদ্মে বসে ফুলের লাবণ্য সম্বন্ধে বলতে পারি যে লাবণ্য অনেকখানি হারিয়েছে ফুল চটকানোর দরুণ, কিন্তু ফুলের রচয়িতাকে উপদেশ দিইনে ফুল-স্থষ্টি ছেড়ে মাছিক পত্রিকা লিখতে। এই লাবণ্য আছে বলেই মুকুমার শিল্পের নকল দেখে’ আসলটাকে বোঝাই শক্ত হয় এবং সেজন্য অনেক সময়ে শিল্পীকে অযথা দায়-দোযে পড়তেও হয় কাগজওয়ালার কাছে। আলো মাখা হ’য়ে ফুল একটি লাবণ্য পাচ্ছে, ছায়াতে ফুল আর এক লাবণ্য পাচ্ছে, শিশিরে ধোয়া ফুল, বৃষ্টিজর্জর ফুল—লাবণ্য সবটাতেই রয়েছে শুধু অবস্থাভেদে লাবণ্যের বিভিন্নত ঘটছে মাত্র। কবি কালিদাস বিরহী যক্ষকে একটি চমৎকার লাবণ্য দিলেন—“কনকবলয়ন্ত্রংশরিক্তপ্রকোষ্ঠী”। এটা ম্যালেরিয়া রোগীর লাবণ্য বলে ধরা চলে না— অবস্থা বিশেষে ক্ষীণ-চন্দ্রকলার মতো লাবণ্যময় রূপটি দিয়েছেন যক্ষকে কলি ; আবার যক্ষ যখন ফিরেছিল অলকায় তখনকার তার লাবণ্য যদি দিতেন কালিদাস তবে সেটা স্বতন্ত্র রকমের নিশ্চয়ই হ’ত । এমনি সকল দিকেই দেখবোপ লাবণ্যের প্রকার-ভেদ হচ্ছে অবস্থা ও পাত্র ভেদে । অনেক জিনিষের সঙ্গে তুলনা দিয়ে লাবণ্যের প্রকারভেদ বোঝাতে চলেছেন প্রাচীন কবির, যেমন—“চম্পক শোণ কুমুম কনকাচল জিতল গেীরতনু লাবণীরে”, কিংবা “তপত কাঞ্চন কাস্তি কলেবর”, অথবা “অখিল ভুবন উজীরকারি কুন্দ কনক কাতিয়া”, “অপরূপ হেমমণি-ভাস অখিল ভুবনে পরকাশ” এই হ'ল গৌরাঙ্গের লাবণ্য বোঝাতে অনেকগুলো ধাতু এবং ফুলের অবতারণা। তারপর শু্যাম