পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

r লাবণ্য ৩৭৭ লাবণ্য বোঝাতে বলা হ’ল, যথা—“জনু জলধর রুচির অঙ্গ” ; রাধাকৃষ্ণ দুজনের লাবণ্য বোঝাতে বলা হ’ল —“ও নব জলধর অঙ্গ; ইহ থির বিজুরী তরঙ্গ ; ও বর মরকত ঠাম, ইহ কাঞ্চন দশবাণ", আবার যেমন— ও তনু তরুণ “তমাল, ইহ হেম যুর্থী রসাল, ও নব পদুমিনী সাজ, ইহ মত্ত মধুকর রাজ, ও মুখ চাদ উজোর” ইত্যাদি । মানুষের লাবণ্য তারপর কাপড়ের লাবণ্য, তার বেলাতেও বল্লেন কবি—“বিজুরী বিলাসিত, বাস”, গলার হারের লাবণ্য—“হার কি তারক দৌতিক ছন্দ”, হাসির লাবণ্য--- “হাস কি ঝরয়ে অমিয়া মকরদ, পদতলের লাবণ্য—“পদতলে থলকি কমল ঘনরাগ”, করতলের লাবণ্য—“করকিসলয় কিয়ে অরুণ বিকাশ”। শুধু রঙ বোঝাতেই নানা তুলনা তা নয় লাবণ্যটি বোঝানোর দিকে বিশেষ লক্ষ্য রেখে বৈষ্ণব কবির একটি একটি বস্তুর উপমা দিয়ে চলেছেন ; যেমন—“কুবলয় নীলরতন দলিতাঞ্জন মেঘপুঞ্জ জিনি বরণ স্বছাদ”—বর্ণের ও লাবণ্যের ছন্দ এক সঙ্গে পাই এখানে। আবার—“মরকত মঞ্জু মুকুর মুখমণ্ডল”, কিংবা “কুবলয় কন্দর কুমুম কলেবর, কালিম কান্তি কলোল” —লাবণ্যের কল্লোল পাচ্ছি। ভাবের লাবণ্য বোঝাতে নানা ভঙ্গি বা ভঙ্গের অবতারণা করেছেন কবির ; যেমন—“হেলন কল্পতরু ললিত ত্রিভঙ্গ”,— যেমন তেমন করে তেড়া বাকী নয় ভঙ্গিটি। ভুরুর ভঙ্গি “কামের কামাল জিনি ভাঙ বিভঙ্গ”, আবার যেমন—“ও মুখৰ্চাদ উজোর, ইত দিঠি লুবধ চকোর”, কিংবা “অরুণ নিয়ড়ে পুন চন্দ, গোবিন্দ দাস রহু ধন্দ”— লাবণ্যের.পরিসীমা না পেয়ে কবির বিভ্রম ঘটলো । বিশেষণ হিসেবে শুধু যে কথাগুলো নানা পদাবলীতে বসালেন কবিরা তা তো নয়, বিশেষ করে লাবণ্যটি বোঝাতে চেষ্টা পেলেন র্তারা । ‘e ভাবের ভঙ্গিমার সঙ্গে লাবণ্যের যোগাযোগ দেখলেম, এমন মান পরিমাণের সঙ্গে তার যোগের দু’একটা দৃষ্টান্ত কবিদের কাছ থেকে দেবে, যেমন—“বিষদ বারণ বাহু বৈভব”, “কনক 7ಶ್ಯ তমালহু কত কত দুহু তুহু তনু বাধ”, “মাঝহি মাঝ মহা-মরকত সম শু্যামের নটরাজ” “অবনি বিলম্বিতবলি বনমাল”, “বনি বনমাল আজানুলম্বিত”, “কামিনী কেট নয়ননীল উতপল পরিপূরিত মুখচন্দ”,— মুখচন্দ্রে লাবণ্য সৌন্দর্য মাপজোখ এক সঙ্গে পেয়ে গেলেম । রাধিকার রূপের লাবণ্য জানাচ্ছেন কবি—“পঞ্চম রাগিণী রূপিণী রে”,—মুরে О. Р. 14—48