পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাদৃশ্য \ס"לס কেবল মনে বিস্ময় ও সন্দেহ দিচ্ছে। এমনি ছবির বেলাতেও ছবিকে চকিতে মানুষ বলে’ ভ্ৰম হ’ল, আবার চকিতে ভ্রম দূরও হ’ল। এই ধরণের সদৃশকরণ নিশ্চয়ান্ত সন্দেহালঙ্কার বলে ভ্রান্তিমৎ অলঙ্কারের কোঠায় রাখা চল্লো । সদৃশ কাকে বলবো, তার বেলায় পণ্ডিতেরা বললেন—“তদ্ভিন্নত্বে সতি তদ্‌গতভূয়োধমবত্তম” • আকারগত সাদৃশ্য বজায় রাখা না রাখার স্বাধীনতা রইলো কবির, কাজেই সহজে মুখচন্দ্র এই উপমা দিয়ে বসলেন ; এখানে চন্দ্রের গোলাকৃতি মুখের সঙ্গে মিললো কি না সে কথাই উঠলে না—দুই, বিভিন্ন বস্তুও সহজে মিলে গেল। এমনি বাঙলাতে এই শ্রেণীর আর একটি চমৎকার উপমা হ’ল সোনামুখী । এখানে চাদমুখের সঙ্গে চন্দ্রমণ্ডলের যে একটু বা যোগ তাও নেই—সম্পূর্ণ দুই বিভিন্ন বস্তু সোনা আর মুখ । ছবি মূর্তি সবই গোড়া থেকে আকৃতির বাধনে ধরা ; কাজেই চিত্রকারকে উপমা দেবার বেলায় অন্ত পথ দেখতে হয়েছে৭ আকৃতির মান এবং প্রকৃতির সম্মান দুই বজায় রেখে উপমা । হাতের উপম৷ হ’ল হাতীর শুড়, চোখের হ’ল খঞ্জন, মাছ, পদ্মপলাশ কত কী। এর মধ্যে কতক উপম। ছবিতেও যেমন কবিতাতেও তেমন খেটে গেল । সঙ্গীত কলা পুরোপুরি সাদৃশ্য দেবার পথে সবার চেয়ে এগোলো-বসন্তবাহার রাগিণী বীণাতে বঁাশীতে বাজলে, শুধু ভাবের দিক দিয়ে বসন্তশ্রীর সাদৃশ্ব পেয়ে চল্লো স্বর অথচ কোকিলের কুহুধ্বনি ইত্যাদির প্রতিধ্বনি একটুও দিলে না। এই রূপভর জগৎ এখানে সব কিছু যা দেখছি জলে স্থলে আকাশৈ তারা যেমন নিজ নিজ রূপটা দেখাচ্ছে তেমনি ভাবও জানাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে এবং নানা ভঙ্গি ও ভাবের দ্বারা এ ওর উপমা হ’য়ে নানা সাদৃশু লাভ করছে। সূর্যকে তো সূর্য বললেই যথেষ্ট এবং সূর্যকে সেই তার নিজ মূর্তিতে দেখেই কাজও চলে সত্য, কিন্তু ওই যে বর্ণন করলেন 'জবাকুসুমসঙ্কাশং করে সূর্য—এতে ক’রেই জানি যে, গ্ৰহাধিপতি একটি ফুলের সাদৃশ্য હ সাযুজ্য পেতে ব্যাকুল হ’য়ে কোনো এক কবিকে বেদন জানিয়েছিল কোনো সময়ে। শাদা মেঘ শরতের হাওয়ায় ভেসে এল,— সে কি মেঘ বলেই দেখলো নিজেকে ? কবিতায় বলা হ’ল ছবিতে লেখা