বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী
শিল্পে অনধিকার
আজ থেকে প্রায় ১৫ বৎসর আগে আমার গুরু আর আমি দুজনে মিলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কোণে শিল্পের একটা খেলাঘর কল্পনা করেছিলেম। আজ এইখানে যাঁরা আমার গুরুজন ও নমস্য এবং যাঁরা আমার সুহৃদ্ এবং আদরণীয়, তাঁরা মিলে আমার কল্পনার জিনিষকে রূপ দিয়ে যথার্থই আমায় চিরদিনের মতো কৃতজ্ঞতার ঋণে আবদ্ধ করেছেন। আমার কতকালের স্বপ্ন সত্য হয়ে উঠেছে—আজ সন্ধ্যায়।
কেবল সেদিনের কল্পনার সঙ্গে আজকের সত্যিকার জিনিষটার মধ্যে একটি বিষয়ে অমিল দেখ্ছি—সেটা এই সভায় আমার স্থান নিয়ে। সেদিন ছিলেম আমি দর্শকের মধ্যে,—প্রদর্শক কিম্বা বক্তার আসনে নয়। তাই এক-একবার মনে হচ্ছে আজকেরটাই বুঝি দরিদ্রের স্বপ্নের মতো একটা ঘটনা—হঠাৎ মিলিয়ে যেতেও পারে।
কিন্তু স্বপ্নই হোক্ আর সত্যই হোক্, এরি আনন্দ আমাকে নূতন উৎসাহে দিনের পর দিন কাজ করতে চালিয়ে নেবে—যতক্ষণ আমার কাজ করার এবং বক্তৃতা দেবার শক্তি থাকবে।
যোগ সাধন করতে হয় শুনেছি চোখ বুজে, শ্বাসপ্রশ্বাস দমন করে; কিন্তু শিল্প-সাধনার প্রকার অন্য প্রকার—চোখ খুলেই রাখতে হয়, প্রাণকে জাগ্রত রাখতে হয়, মনকে পিঞ্জর-খোলা পাখীর মতো মুক্তি দিতে হয়—কল্পনা-লোকে ও বাস্তব-জগতে সুখে বিচরণ কর্তে। প্রত্যেক শিল্পীকে স্বপ্ন-ধরার জাল নিজের মতো করে বুনে নিতে