পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯২
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

এইরূপে সারাদিন ইহারা ধ্বনি করে। এই ধ্বনি শুনিলেই বুঝিবেন—নিকটেই “ছোট-বসন্ত” রহিয়াছে। ইহার কণ্ঠস্বরের জন্যই ইহার মারাঠি নাম—“জুক্‌টূক্‌”।

 “বড় বসন্তের” কণ্ঠস্বর সম্পূর্ণ বিভিন্ন। বাগানের মধ্যে মাঝে মাঝে বেশ উচ্চগ্রামে “কুটুর-কুটুর কুটুরর—কুটুর” শব্দ করিয়া থামিয়া যায়, এবং বেশ খানিকক্ষণ বিরামের পর আবার ঐরূপ ডাক বাহির হয়। ছোট বসন্তের মত অবিরত ইহারা ডাকে না। এক একটা কণ্ঠধ্বনির ধমকের মাঝখানে বেশ খানিকটা বিরাম থাকে।

 ইহারা উভয়েই ঘন পত্রবহুল বড় বড় গাছের উচ্চতর শাখা মধ্যেই বিচরণ করিতে ভালবাসে। যদিও ইহারা নিজেদের অস্তিত্ব বেশ জোর গলায় জাহির করে, তবু ইহাদের দর্শন পাওয়া সুলভ নহে। ইহাদের সবুজ গাত্রবর্ণ সবুজ পাতার সঙ্গে মিশিয়া ইহাদিগকে অদৃশ্য করিয়া রাখে। তবে ইহারা “হলদে পাখীর” মত লাজুক নহে। মানুষের আভাস পাইলেই লুক্কাইত হইবার চেষ্টা করে না। সুতরাং একটু ধৈর্য্যসহকারে নিরীক্ষণ করিলে ইহাদের আবিষ্কার করা শক্ত নহে।

 মোটামুটি সবুজ বর্ণের পাখী হইলেও ছোট পাখীটির দেহে বর্ণবৈচিত্র্য আছে। চঞ্চুর মূলদেশে তিনটি বর্ণের সমাবেশ হইয়াছে। ঠিক চঞ্চুর গোঁড়ায় উপরদিকে ললাট ও ঘাড়ের খানিকটা উজ্জ্বল টক্‌টকে লাল, গাল, গলা, আর চোখের উপরে ও নীচে খানিকটা বেশ উজ্জ্বল হলদে। চঞ্চুর নিকট হইতে একটা কালো দাগ ঘাড় পর্য্যন্ত যাইয়া উর্দ্ধে মাথা পর্য্যন্ত উঠিয়াছে। মাঝে মাঝে সবুজ আছে। বাকী দেহটা ঈষৎ পীত আভাযুক্ত সবুজ—লেজে নিম্নদিকে নীল রংও আছে। চঞ্চুটি ঘনকৃষ্ণবর্ণ, পা দুটি লাল। লেজটি অতিশয় ছোট হওয়ায় ইহাদের চেহারাটা বেঁড়ে দেখায়। আবার চঞ্চুর