পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বসন্ত বাউরী
৯৩

মূলদেশে কতকগুলি রোঁয়া গুচ্ছের মত বাহির হইয়া থাকায় ইহাদের আরও অদ্ভুত দেখায়।

 বড় পাখীটির দেহে ছোটটির মত অতগুলি বর্ণের সমাবেশ নাই। এটির দেহের সবটাই সবুজ, শুধু মস্তকটি পীতাভ বাদামী এবং চোখের চার পাশ কমলা লেবুর বর্ণের মত।

 ইহারা প্রধানতঃ ফলভুক্। বটপাকুড়ের ফল এদের খুব প্রিয়, সেইজন্য এই উভয়বিধ গাছে ইহাদের খুঁজিলেই পাওয়া যায়। তবে নিছক নিরামিষাশী নহে। ইহারা কীটাদিও ভোজন করে।

 মার্চ মাস হইতে মে মাস পর্য্যন্ত ইহাদের সন্তানজনন কাল। এই সময় লক্ষ্য করিলে দেখা যাইবে একটি বসন্ত চুপ করিয়া শাখার উপর বসিয়া আছে। আর একটি ধ্বনি করিতে করিতে অনবরত মাথাটা নোয়াইতেছে। এই দ্বিতীয়টী হইলেন পুরুষ। ইনি ঐভাবে স্ত্রী পাখীটীর মনোহরণ করিবার চেষ্টা করিয়া থাকেন। কাঠঠোক্‌রার মত ইহারাও বৃক্ষকোটরে নীড় নির্ম্মাণ করে। এবং ঐ পাখীর মতই মস্তকরূপী হাতুড়ী ও চঞ্চুরূপ বাঁটালির সাহায্যে ইহারা বৃক্ষকাণ্ডে গর্ত্ত করিয়া লয়। কাঠঠোক্‌রার মতই ইহারাও গাছের ফাঁপাস্থান বাছিয়া লয়। সব সময়ে অবশ্য ফাঁপা ডাল পাওয়া যায় না। তখন গর্ত্তের মুখ হইতে নীড় পর্য্যন্ত সম্পূর্ণ সুড়ঙ্গটাও চঞ্চুর আঘাতে খনন করিয়া লইতে হয়। ইহারাও সুনিপুণ সূত্রধর এবং অতি পরিপাটী সুড়ঙ্গ খনন করে। এই কার্য্যের জন্যই প্রকৃতির বিধানে ইহাদের চঞ্চু গোড়ার দিকে পুরু এবং অগ্রভাগ সূচাল। ইহাদের বাসা নির্ম্মাণে একটা বিশেষত্ব এই যে ইহারা ডালের উপরিভাগে গর্ত্ত করে না। ইহাদের নীড়ের প্রবেশ পথটী থাকে ডালের তলদেশে। বড় বড় গাছের মাঝারি ডালগুলির নীচের দিকে যে ফুটাগুলি দেখা যায় সেগুলি “বসন্ত” পাখীর নীড় রচনার ফল। বৃষ্টির জল যাহাতে নীড়মধ্যে প্রবেশ না করে সেইজন্যই