পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১১০
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

মানিয়া চলে? ইহারা কি প্রতি বৎসর নিজ নিজ সঙ্গী বা সঙ্গিনী গ্রহণ করে না,এক একজোড়া স্ত্রীপুরুষ সারাজীবনের জন্য মিলিত হয়? পাখীরা ঘুমায় কি করিয়া? গাছের ডালে বসিয়া যে সব পাখী নিদ্রা যায় তাহারা পড়িয়া যায় না কেন? শিশু ও বালকবালিকার কৌতুহলী মনে এই সব প্রশ্ন তুলিয়া তাহার সমাধান করিবার চেষ্টা করিলে তাহাদের শুধু যে আনন্দ দান করা হইবে তাহা নহে, তাহাদের চিত্তকে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণক্ষম করিয়া তোলা যাইতে পারে।

 উক্ত বহু প্রকারের সমস্যা ছাড়িয়া দিলেও—পাখীর জীবনের বিচিত্রতম ব্যাপার তাহার যাযাবরত্ব। সে এক ঋতুতে এক দেশে আসিয়া খায় দায়, গান করে আবার অন্য ঋতুতে কোনও কোনও পাখী ৩।৪ হাজার মাইল দূর দেশে যাইয়া বাসা রচনা করিয়া সন্তান উৎপাদন করে। ইহা বিহঙ্গ জীবনের আশ্চর্য্যতম ব্যাপার। মার্কিন দেশে পাখীর যাযাবরত্ব সম্বন্ধে গবেষণা ও পর্য্যবেক্ষণ যথেষ্ট হইয়াছে। ভারতবর্ষের পাখী সম্বন্ধে সামান্যই জ্ঞান আমাদের আছে।

 মার্কিন দেশে জ্ঞানস্পৃহা অত্যন্ত তীব্র। এই নবীন জাতি নানা দিকে নিজেকে সমৃদ্ধ করিতে তৎপর, যাহার ফলে আজ সে বিশ্ব সাম্রাজ্য দাবী করিবার যোগ্যতা লাভ করিয়াছে। পাখীর যাবাবর জীবনের সম্যক গবেষণা ইহাদের মধ্যে হওয়ার আর একটা কারণ আছে। ইউরোপীয় দেশের অধিবাসী হইতেই আজ মার্কিনজাতি উদ্ভূত। ইউরোপীয়গণ কর্ত্তৃক মার্কিন আবিষ্কারের মূলে রহিয়াছে যাযাবর পাখী।

 জগদ্বিখ্যাত পোত-পরিচালক কলাম্বস অঙ্ক কষিয়া ইউরোপের পশ্চিমে সমুদ্রপারে এক মহাদেশ আছে স্থির করিয়াছিলেন। বহুকষ্টে জাহাজ জোগাড় করিয়া তো তিনি অসীম সমুদ্রে ভাসিলেন। কিন্তু কিছুকাল পরে তাঁর অধীন নাবিক মাঝিমাল্লারা ঠিক করিল যে