পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পাখীর কথা
১১৫

 মুনিয়া পাখীদের ঝাঁক আমি দিনের বেলাতেই লক্ষ্য করিয়াছি। মনুষ্যদৃষ্টি এড়াইয়া আকাশ পথে অতি উচ্চে খুব কম পাখীই যায়। এইরূপ ভ্রমণের সময় খুব বেশী দ্রুতগতিতে ইহারা চলে না। স্বাভাবিক উড়িবার গতিবেগই যথেষ্ট বলিয়া ইহারা মনে করে। ছোট ছোট গায়ক পাখীরা ঘণ্টায় কুড়ি মাইল বেগে সাধারণতঃ চলে। বড় পাখীরা ঘণ্টায় ৪০ মাইল পর্যন্ত চলিয়া থাকে। কেহ কেহ অনুমান করেন যে হংস জাতীয় পাখীরা ঘণ্টায় পঞ্চাশ মাইল বেগে গমন করে। কেবল পারাবতই একটু বেশী বেগে চলে, বিশেষ করিয়া “হোমিং” পারাবত—যাহাদিগকে সংবাদ আদান প্রদানে আজও যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। গত মহাযুদ্ধের সময় বর্ম্মাপ্রান্তে লড়াইয়ের সময় পথভ্রষ্ট দুই একটি এরূপ পারাবতকে কেহ কেহ কলিকাতায় নিজগৃহে দেখিতে পাইয়াছিলেন।

 বৈজ্ঞানিকের নীরস গবেষণা ছাড়িয়া দিলেও, পক্ষিজীবনের বিবিধ রহস্য সম্বন্ধে পর্য্যালোচনা শুধু যে আনন্দ বর্দ্ধন করে তাহা নহে, অবিকশিত চিত্তের রুদ্ধদুয়ারের ফাঁক দিয়া কিছু আলোকের রশ্মিপাত করিয়া মনের মণিকোঠার অন্ধকারও দূর করিতে পারে। যদি বাঙ্গলার ছাত্র ও অভিভাবকদের অল্প কয়েকজনের মনেও এই বিষয় কৌতুহল সঞ্চারিত হয়—তাহা হইলেই এ পুস্তিকা প্রকাশ সার্থক হইবে। এই পুস্তকে বর্ণিত পাখীদের এক এক জিলায় এক এক প্রকার চল্‌তি নাম আছে। ঐ সকল সংগ্রহ করিতে পারি নাই। সুরসিক পাঠক যদি আমাকে লিখিয়া জানান—ভবিষ্যত সংস্করণে তাহা স্বীকৃত হইবে।