পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪৪
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

তবে তাহার অপমানের শেষ থাকে না। কাক সেইজন্য শালিককে ভয় করিলেও, কুনজরে দেখে।

 দলবদ্ধভাবে বাস করিলেও ইহাদের পরস্পরের মধ্যে ঝগড়াবিরোধ অজ্ঞাত নহে। ঝগড়া, মল্লযুদ্ধ—এগুলি তাদের জীবনের আমোদ আহ্লাদেরই সামিল। কেননা, ঝগড়া হয় কিন্তু খুনাখুনি হয় না। বিশেষতঃ প্রজননঋতুতে কোনও শালিকতরুণীর পাণিপ্রার্থী কয়েকটি শালিক যুবকের মধ্যে অনেক সময় বচসা ও পরে হাতাহাতি একটা সাধারণ ব্যাপার। যখন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শালিক-যুবকের মধ্যে নখর ও চঞ্চুর সাহায্যে শক্তি পরীক্ষা চলে, তখন অপরাপর সঙ্গীরা তাদের ঘিরিয়া কেহ উৎসাহ ও কেহ টিটকারি দেয়। তাহারা যখন এইরূপে ব্যস্ত থাকে, কাকের তখন মহা স্ফূর্ত্তি হয়। তিন চার জন কাক তখন কেহ গাছের ডালে, কেহ অদূরে ভূমির উপর বসিয়া যুদ্ধ ও যোদ্ধা সম্বন্ধে নানারূপ অভিমত প্রকাশ করিতে থাকে। কখনও কখনও দেখিয়াছি হঠাৎ কাকের মধ্যে কাহারও একটু নষ্টামি করিবার প্রবৃত্তি জাগিয়া উঠে এবং সে আস্তে আস্তে অগ্রসর হইয়া কোনও শালিকের লেজ ধরিয়া টান মারে। শালিক তখন ব্যস্ত থাকায় একটু সরিয়া বসে মাত্র। কিন্তু বেশী জ্বালাতন করিলে কয়েকটি শালিক মিলিয়া কাককে বেশ উত্তমমধ্যম দিয়া দেয়। কাপুরুষ কাক কিল খাইয়া কিল চুরি করে, কিল ফিরাইয়া দেওয়ার সাহস তাহার হয় না। তবে শালিককে একা পাইলে বায়স ছাড়িয়া কথা কয় না। একদিনকার ঘটনা বলি। বৃষ্টি পড়িতেছিল, আমি এক বন্ধু-গৃহে বারান্দায় একেলা শ্রাবণ বরষার ঝরঝরানি গান শুনিতেছিলাম। বাগানের মধ্যে কামিনী ও হেনার ঝোপের নীচে বসিয়া কয়েকটি বায়স বৃষ্টির বিরুদ্ধে তাহাদের অভিমত বেশ সজোরে ব্যক্ত করিতেছিল। উহাদের চীৎকারে আমার চিন্তার ধারা ছিন্ন