পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
বাঙ্গালার ইতিহাস।
২ অ

তবে কল্য আমরা সমুদায় সৈন্য একত্র করিয়া যুদ্ধার্থে প্রস্তুত হইব। তদনুসারে নবাব সেনাপতিদিগকে যুদ্ধ হইতে নিবৃত্ত হইবার আজ্ঞা পাঠাইলেন। নবাবের সেনাপতি মোহনলাল ইঙ্গরেজদিগের সহিত ঘোরতর যুদ্ধ করিতেছিলেন; কিন্তু নবাবের এই আজ্ঞা পাইয়া অত্যন্ত অনিচ্ছা পূর্ব্বক নিবৃত্ত হইলেন। তিনি অকস্মাৎ ক্ষান্ত হওয়াতে,সৈন্যদিগের উৎসাহ ভঙ্গ হইল। তখন তাহারা ভঙ্গ দিয়া চারি দিকে পলায়ন করিতে আরম্ভ করিল; সুতরাং ক্লাইবের অনায়াসে সম্পর্ণ জয় লাভ হইল। কিন্তু যদি মীরজাফর বিশ্বাসঘাতক না হইতেন এবং ঈদৃশ সময়ে এরূপ প্রতারণা না করিতেন, তাহা হইলে ক্লাইবের কোন ক্রমেই জয়লাভের সম্ভাবনা ছিল না।

 তদনন্তর সিরাজউদ্দৌলা এক উষ্ট্রে আরোহণ করিয়া, দুই সহস্র অশ্বারোহ সমভিব্যাহারে, সমস্ত রাত্রি গমন করত,পর দিন বেলা ৮ টার সময়, মুরশিদাবাদে উপস্থিত হইলেন, এবং উপস্থিত হইয়াই, আপনার প্রধান প্রধান ভৃত্য ও অমাত্যবর্গকে সন্নিধানে আসিতে আজ্ঞা করিলেন। কিন্তু তাহারা সকলেই স্ব স্ব আলয়ে প্রস্থান করিল। অনের কথা দূরে থাকুক, সে সময়ে তাঁহার শ্বশুর পর্যন্তও তাঁহাকে পরিত্যাগ করিয়া যান।

 নবাব সমস্ত দিন একাকী আপন প্রাসাদে কাল হরণ করিলেন; পরিশেষে নিতান্ত হতাশ হইয়া, রাত্রি ৩ টার সময়, মহিষীগণ ও কতিপয় প্রিয় পাত্র মাত্র সমভিব্যাহারে করিয়া,শকটাররাহণ পূর্ব্বক ভগবানগোলা পলায়ন করিলেন। তথায় উপস্থিত হইয়া, ফরাসি সেনাপতি