পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।
২ অ

 যৎকালে তিনি নগরে আনীত হইলেন, তখন মীরজাফর অধিকমাত্রায় অফেণ খাইয়া তন্দ্রাবেশে ছিলেন। তাঁহার পুত্র,অতি পাপাত্মা মীরন,সিরাজউদ্দৌলাকে উপস্থিত শুনিয়া তাঁহাকে আপন আলয় সন্নিধানে রুদ্ধ করিতে আজ্ঞা দিল,এবং দুই এক ঘণ্টার মধ্যেই স্বীয় বয়স্যগণের নিকট তাঁহার প্রাণ বধের ভারগ্রহণের প্রস্তাব করিল। কিন্তু তাহারা একে একে সকলেই অস্বীকার করিল। আলিবর্দি খাঁ মহম্মদিবেগ নামক এক ব্যক্তিকে প্রতিপালন করিয়াছিলেন। পরিশেষে, সেই দুরাত্মাই এই নিষ্ঠুর ব্যাপার সমাধানের ভার গ্রহণ করিল। সে গৃহে প্রবেশ করিবামাত্র, হতভাগ্য নবাব, তাহার আগমনের অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া, করুণস্বরে কহিলেন আমি যে বিনা অপরাধে হুসেনকুলি খাঁর প্রাণদণ্ড করিয়াছিলাম তাহার প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ আমাকে অবশ্যই প্রাণত্যাগ করিতে হইবেক। এই বাক্য উচ্চারণ করিবামাত্র, দুরাচার মহম্মদিবেগ তরবারি দ্বারা তাঁহার মস্তকচ্ছেদন করিল। উপর্য্যুপরি কয়েক আঘাতের পর, তিনি, হুসেনকুলি খাঁর প্রাণদণ্ডের প্রতিফল পাইলাম, এই বলিয়া মৃত ও ভূতলে পতিত হইলেন।

 অনন্তর তাঁহার মৃত দেহকে খণ্ড খণ্ড করিল; এবং অযত্ন ও অনাদর পূর্ব্বক হস্তিপৃষ্ঠে নিক্ষিপ্ত করিয়া, জনাকীর্ণ রাজ পথ দিয়া, কবর দিবার স্থানে লইয়া চলিল। ঐ সময়ে সকলেই লক্ষ্য করিয়াছিল যে, কোন কারণ বশতঃ পথের মধ্যে মাহুতের থামিবার আবশ্যক হওয়াতে, আঠার মাস পূর্ব্বে সিরাজউদ্দৌলা যে স্থানে হুসেনকুলি