পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ।

মগধের গুপ্তরাজবংশ।

 কোন্ সময়ে প্রথম কুমারগুপ্তের বংশলোপ হইয়াছিল এবং গোবিন্দগুপ্তের বংশধরগণ সিংহাসনলাভ করিয়াছিলেন তাহা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। বিষ্ণুগুপ্ত, তৃতীয় চন্দ্রগুপ্ত, জয়গুপ্ত, হরিগুপ্ত প্রভৃতি রাজগণের শাসনকালে মগধ ও বঙ্গের শাসনকর্ত্তৃগণ প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন রাজা হইয়াছিলেন। আওরঙ্গজেবের পুত্র প্রথম শাহ্-আলমের মৃত্যুর পরে তাঁহার পুত্র ও পৌত্রগণ যখন গৃহবিবাদে উন্মত্ত, তখন বিস্তৃত মোগলসাম্রাজ্যের শাসনকর্ত্তা ও সেনাপতিগণ প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা লাভ করিয়াও যেমন সুলতান বা বাদ্‌শাহ উপাধি গ্রহণ করেন নাই, সেইরূপ প্রাচীন গুপ্তসাম্রাজ্যের শেষদশায় ভারতবর্ষের বহু প্রদেশের শাসনকর্ত্তা ও তাঁহাদিগের বংশধরগণ প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করিয়াও গুপ্তবংশীয় সম্রাট্‌দত্ত উপাধি লইয়াই সন্তুষ্ট ছিলেন এবং রাজোপাধি গ্রহণ করেন নাই। স্কন্দগুপ্তের মৃত্যুর পঞ্চশতবর্ষ পরেও বাঙ্গালাদেশের স্থানে স্থানে “কুমারামাত্যাধিকরণ” অথবা “মণ্ডলাধিকরণ” উপাধিধারী গুপ্তসাম্রাজ্যের রাজকর্ম্মচারিগণের বংশধরগণ দেশ শাসন করিতেন। প্রাচীন গুপ্তবংশীয় সম্রাট্‌গণের রাজত্বকালে “কুমারামাত্যাধিকরণ” বা “মণ্ডলাধিকরণ” উপাধিধারী তাঁহাদিগের পূর্ব্বপুরুষগণ যে রাজমুদ্রা লইয়া সাম্রাজ্যের কার্য্য সম্পন্ন করিতেন, সাম্রাজ্যধ্বংসের শত শত বর্ষ পরেও তাঁহারা সেই মুদ্রা রাজকীয়মুদ্রারূপে ব্যবহার করিতেন।