পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
১১১

পাটলিপুত্র ও কুশীনগরের বৌদ্ধযাজকগণকে শাসন করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দও পূর্ব্বে এই মত প্রকাশ করিয়াছেন[১]

 শশাঙ্কের মৃত্যুর পরে তাঁহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা অথবা পিতৃব্যপুত্র মাধবগুপ্ত মগধের সিংহাসন অধিকার করিয়াছিলেন। শশাঙ্ক যে গুপ্তবংশীয় ছিলেন, ইহার বহু প্রমাণাভাস পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে। শশাঙ্ক সম্ভবতঃ মগধের গুপ্তবংশজাত ছিলেন, এই অনুমান সত্য হইলে তাঁহার সম্বন্ধনির্ণয়ে বিশেষ কোন বাধা থাকে না। মহাসেনগুপ্ত কামরূপরাজ সুস্থিতবর্ম্মার সমসাময়িক ব্যক্তি। সুস্থিতবর্ম্মার কনিষ্ঠপুত্র ভাস্করবর্ম্মা শশাঙ্কের সমসাময়িক ব্যক্তি ছিলেন; অতএব শশাঙ্ক মহাসেনগুপ্তের জ্যেষ্ঠপুত্র অথবা পুত্রস্থানীয়। মহাসেনগুপ্তের পুত্র মাধবগুপ্ত, প্রভাকরবর্দ্ধনের কনিষ্ঠ পুত্র হর্ষবর্দ্ধনের সমসাময়িক ব্যক্তি; শশাঙ্ক, প্রভাকরবর্দ্ধন ও রাজ্যবর্দ্ধনের সমসাময়িক ব্যক্তি; অতএব শশাঙ্ক মাধবগুপ্তের জ্যেষ্ঠস্থানীয়। এই সকল প্রমাণের ফল অনুমান মাত্র, নূতন আবিষ্কার না হইলে শশাঙ্কের সহিত মগধের গুপ্তরাজবংশের সম্বন্ধ নির্দ্দিষ্ট হইবে না। মাধবগুপ্তের রাজ্যকালে মগধের গুপ্তবংশীয় রাজগণ হর্ষবর্দ্ধনের সামন্তরূপে পরিগণিত হইতেন। নিধানপুরে আবিষ্কৃত ভাস্করবর্ম্মার তাম্রশাসনে দেখিতে পাওয়া যায় যে, উক্ত তাম্রশাসন কর্ণসুবর্ণবাসক হইতে প্রদত্ত হইয়াছিল[২]। ইহা হইতে শ্রীযুক্ত পদ্মনাথ ভট্টাচার্য্য অনুমান করেন যে, কর্ণসুবর্ণ তৎকালে কামরূপরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল[৩]। ঐতিহাসিক ভিন্সেণ্ট্ স্মিথ এই উক্তির সমর্থন করিয়াছেন[৪], কিন্তু এই অনুমান যথার্থ বলিয়া বোধ হয় না, কারণ, স্কন্ধাবার বা বাসক শব্দে

  1. গৌড়রাজমালা, পৃঃ ১৩
  2. Epigraphia Indica, Vol. XII, p. 73.
  3. বিজয়া, আষাঢ়, ১৩২০ পৃঃ ৬২৭।
  4. V. A. Smith, Early History of India, 3rd. Edition, p. 356.