পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।

নাসিক প্রদেশের একখানি গ্রাম বৈশাখ মাসে চন্দ্রগ্রহণোপলক্ষে এক ব্রাহ্মণকে দান করিয়াছিলেন। এই তাম্রশাসন হইতে জানিতে পারা যায় যে, গঙ্গবংশীয় কোন রাজা তৃতীয় গোবিন্দ কর্ত্তৃক কারারুদ্ধ হইয়াছিলেন। কারামুক্ত হইয়া তিনি পুনরায় বিদ্রোহী হইয়াছিলেন এবং গোবিন্দ কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়াছিলেন। মালবরাজ গোবিন্দের আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। তিনি বিন্ধ্যপর্ব্বতে কটকনিবেশ করিয়াছেন শুনিয়া মারশর্ব্ব নামক জনৈক রাজা তাঁহার শরণাগত হইয়াছিলেন। ইহার পরে গোবিন্দ তুঙ্গভদ্রাতীরে গমন করিয়া পল্লবগণকে পরাজিত করিয়াছিলেন[১]। উক্ত বৎসরে শ্রাবণ মাসে অমাবস্যায় সূর্য্যগ্রহণোপলক্ষে গোবিন্দ ময়ূরখণ্ডী নামক স্থান হইতে জনৈক ব্রাহ্মণকে একখানি গ্রাম দান করিয়াছিলেন। এই তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে, গুর্জ্জররাজ, গোবিন্দকে ধনুর্ব্বাণ-হস্তে অগ্রসর হইতে দেখিয়া, ভয়ে রণস্থল পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিয়াছিলেন এবং বেঙ্গীরাজ দূতমুখে গোবিন্দের তুঙ্গভদ্রাতীরে আগমনবার্ত্তা শ্রবণ করিয়া তাঁহার জন্য উচ্চ বাহ্যালী-পরিবেষ্টিত শিবির রচনা করিয়াছিলেন[২]। ৭৩৫ শকাব্দে তৃতীয় গোবিন্দের সামন্ত গঙ্গবংশীয় চাকিরাজ, অর্ককীর্ত্তি নামক জনৈক জৈনমুনিকে একখানি গ্রাম দান করিয়াছিলেন[৩]। উক্ত বর্ষের পৌষ মাসের শুক্লা সপ্তমী পর্য্যন্ত তৃতীয় গোবিন্দ জীবিত ছিলেন, কারণ পূর্ব্বোক্ত দিবসে তাঁহার ভ্রাতুষ্পুত্র সৌরাষ্ট্রের সামন্ত গোবিন্দরাজের সেনানায়ক, মহাসামন্ত বুদ্ধবরস একখানি গ্রাম দান করিয়াছিলেন।

  1. Ibid, pp. 861-62.
  2. Epigraphia Indica, Vol. VI, pp. 150-57.
  3. Ibid, Vol. IV. p. 333.